বিটরুটের উপকারিতা
বিটরুটের উপকারিতা
আসসালামু আলাইকুম, আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো বিটরুট নিয়ে।বিটরুট কি বা এটার উপকারিতা কি। বিটরুটের সাথে অনেকেই পরিচিত আবার অনেকে অপরিচিত। বর্তমান বাংলাদেশ এই বিটরুট সব জায়গায় পাওয়া যায়
খাওয়ার পদ্ধতি বিটরুট দেখতে লাল গোল গোল আকৃতির হয় আবার কিছুটা পেঁয়াজের মত দেখতে। বিটরুট উপকারী সবজি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। বিটরুটে রয়েছে আইরন ও ফাইবার।
আয়রনের সমৃদ্ধ হওয়ায় যাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম বা রক্তশূন্যতা রয়েছে তারা প্রতিদিন বিটরুট খেতে পারেন।
অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে বিটরুট কিভাবে খাব খাওয়া যায়। বিটরুট জুস করে খেতে পারেন আবার সালাত হিসেবেও খাওয়া যায় তবে আপনারা যদি কাঁচা খেতে অপছন্দ করেন তবে রান্না করে খেতে পারেন। যারা স্থায়ীভাবে মোটা হতে চান তার প্রতিদিন বিটরুটের হালুয়া করে খেতে পারেন। বিটরুটে থাকা অ্যান্টিঅক্সাইড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার মুক্ত রাখে। অনেকের শরীরে দেখা যায় যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাত্রার সিস্ট থাকে এই সিস্ট থেকে একসময় টিউমারে পরিণত হয় আবার সেখান থেকে দেখা দেয় ক্যান্সার। সিস্ট প্রতিরোধ করতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিটরুটের উপকারিতা ও অপরিসীম। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য নিয়মিত বিটরুট খাবেন এর পাশাপাশি বিটরুটে থাকা ফাইবার যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা আছে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
নিয়মিত বিট রুট আপনাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি স্কিন গ্লো করতে সাহায্য করে। অনেক সময় দেখা দেয় যে মৌসুম পরিবর্তন হতে শুরু করেছে এই সময়ে অনেকের স্ক্রিনে প্রবলেম দেখা দেয় তাই স্কিনকে ভালো রাখতে চাইলে প্রতিদিন বিটরুট খাওয়ার চেষ্টা করুন।
বিটরুট খেলে যে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যেমন
১ হাই প্রেসার ২ কোলেস্টেরল ৩ লিভারের সমস্যা ৪ আর্থাইটিস ৫ হার্টের সমস্যা ৬ ক্যান্সার
এছাড়াও ধমনী কে সুস্থ রাখতে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে স্টোকের হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
বিটরুট থেকে কোন কোন ভিটামিন রয়েছে এবং ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে কতটা গ্রহণযোগ্য। চলুন একটু জেনে নেই
১০০ গ্রাম বিট থেকে আপনি নেট কার্বোহাইড্রেট পাবেন ৬.০৮ পানি ছাড়া বাড়তি সামগ্রিক পুষ্টি উপাদানে ৬২% নেট কার্বোহাইড্রেট রয়েছে।
১০০ গ্রাম বিটে আপনি ফাইবার পাবেন ২.৮০ গ্রাম। ১০০ গ্রাম শক্তি পাবেন মাত্র ৪৩ ক্যালোরি। বিটরুটের ক্যালোরি কম আপনি বিট খেলে বিটের জন্য ওজন বাড়ানোর তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে ডায়াবেটিক্স নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন। ১০০ গ্রাম বিট রুটে সোডিয়াম থাকে ৭৮ মিলিগ্রাম যা, আপনার দৈনিক চাহিদার ৩%। ১০০ গ্রাম সবজিতে ৩% সোডিয়াম একটু বেশি তবে বিটের পটাশিয়াম বেশি থাকায় দৈনিক চাহিদার ৭%। সোডিয়াম ব্লাড প্রেসার বাড়ালেও বেশি পটাশিয়াম ব্লাড প্রেসার কমাই।বিটরুট থেকে আপনি কোন স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল পাবেন না। বিট খেলে আপনার খারাপ কোলেস্টরেল LDL বাড়াবে না ফলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে এটি ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। ১০০ গ্রাম বিট থেকে ১.৬০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায় বিটের প্রোটিনকে আপনি অনুপাতিকভাবে মাঝারি বলতে পারেন। ডায়াবেটিকস কমাতে সাহায্য করে। ১০০ গ্রাম বিট থেকে আইরন পাবেন আপনার দৈনিক চাহিদার ৪%, পটাশিয়াম ৭%,ম্যাগনেসিয়াম ৫%,জিংক ৩%
এছাড়াও বিটরুটে ভিটামিন A C এবং B6 রয়েছে।রূপচর্চায় বিটরুটের এর ব্যবহার
বিটরুট এমন একটি জাদুকরি উপাদান যা আপনার স্বাস্থ্যের সাথে সাথে রূপচর্চার ক্ষেত্রেও দারুন ভাবে কার্যকর। যেসব আপুদের এবং ভাইয়াদের স্কিনের সমস্যা রয়েছে যেমন ব্রনের দাগ মেছতা কালচে ভাব এবং মুখে গর্ত হওয়া তাদের জন্য বিটরুট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিটরুট বেটে মুখে লাগালে ব্রনের দাগ মেছতা সবকিছু দূর হয়ে যায় এবং স্কিন গ্লো করে
বিটরুটের জাদুকরি কিছু টিপস
১. নিয়মিত বিটরুট খেলে আপনার চোখের জ্যোতি ভালো রাখে।
২. রান্না করার সময় বা কোন কিছু করার সময় আপনার হাতে বা পায়ে আঘাত লাগলে বা ক্ষত হয়ে গেলে সেখানে বিটরুটের রস লেগে দিলে ভালো হয়ে যায়।
৩. নিয়মিত বিটরুট খেলে দাঁত চুয়াল ভালো থাকে। অনেকের ঠান্ডা কিছু মুখে দিলে দাঁত সির সিরিয়ে ওঠে। বিটরুট খেলে তা ভাল হয়।
৫. বিটরুট খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৬. যাদের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের বিটরুট না খাওয়া ভালো।
৭. নিয়মিত বিটরুট খেলে লিভার ভালো থাকে এবং এতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে মুক্তি দেয়।
৮. বিটরুট নিয়মিত খেলে মাথা ব্যথা কানের ব্যথা গলা ব্যথা এবং প্রসাবের জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৯. যাদের মাথার চুল পড়ে যায় এবং মাথায় টাক রয়েছে তাদের জন্য বিটরুট খুব উপকারী একটি সবজি বিটরুটের পাতা বেটে চুলে লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং যাদের মাথায় টাক রয়েছে তারা বিটরুটের সাথে এক টেবিল চামচ হলুদ মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করুন।এছাড়াও চুলের যত্ন নেওয়ার অভাবে মাথায় খুশকি উকুন দেখা দেয় বিটরুটের ক্বথ চুলে লাগালে খুশকি এবং উকুন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১০. গর্ভাবস্থায় বিটরুট খেলে গর্ভের বাচ্চার ত্রুটিপূর্ণ হয়ে থাকে কারণ এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলিক এসিড পাওয়া যায়। ফলিক এসিড ভ্রনের পরিপূর্ণ ভাবে তৈরি হতে সাহায্য করে।
পরিশেষ বলা যায়, বিটরুট শীতকালীন সবজি। বর্তমান বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এটি চাষ হয়ে থাকে। বিটরুট বিভিন্ন ভিটামিনের উৎস হওয়ায় দিন দিন চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। একটি সবজি খেলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের কাজ করে। তা আমরা উপরে আলোচনায় জেনেছি।
নিত্য নতুন আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।