কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয়

 আপনারা কি কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় ও পারকিনসন রোগ প্রতিরোধের উপায় কি সে সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় পোস্টটি আপনাদের জন্য। এছাড়াও আজকে আমরা আলোচনা করব কিভাবে পারকিনসন রোগ থেকে মুক্তি পাবেন এবং পারকিনসন রোগের চিকিৎসার খরচ কত সে সম্পর্কে।

তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় সে সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয়

কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয়

আমরা এখন পারকিনসন রোগ নিয়ে আলোচনা করব। মূলত কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় সে বিষয়ে জানব। পারকিনসন রোগটা মূলত ডোপামিনের অভাবে হয়ে থাকে। মস্তিষ্কে এই রাসায়নিক পদার্থের ঘাটতির জন্য পারকিনসন রোগ দেখা দিয়ে থাকে। ব্রেনের ভেতর একটা ছোট অংশ আছে যেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষাতে বলা হয় সাবস্ট্যানশিয়া নাইগ্রা।

আরো পড়ুনঃ হায়েজ অবস্থায় কায়দা পড়ার বিধান

এই অংশের স্নায়ু কোষ কিংবা নিউরন শুকিয়ে যাবার জন্য ডোপামিন নামক নিউরো ট্র্যান্সমিটার (একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ) নষ্ট হতে থাকে কিংবা এর ঘাটতি দেখা দিয়ে থাকে। মস্তিষ্কে স্বাভাবিক অবস্থাতে ব্যাজাল গ্যাংলিয়া নামক একটা অংশ মানুষের চলাফেরা ও গতির সমন্বয় করে, সেই সমন্বয়ের প্রক্রিয়া ডোপামিনের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে পারকিনসন রোগের সৃষ্টি হয়।

পারকিনসন রোগ প্রতিরোধের উপায় কি

পারকিনসন রোগ প্রতিরোধের উপায় গুলো নিচে উল্লেখ্য করা হলঃ

  • ভিটামিন ডি এবং সি যুক্ত খাবার কিংবা ওষুধ সেবন করতে হবে। কেননা পারকিনসন রোগ প্রতিরোধে এটা সাহায্য করে থাকে।
  • নিজেকে এক জায়গাতে আবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যস্ত রাখতে হবে।
  • বিভিন্ন ভিটামিন যুক্ত সুষম খাবার ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • ঘাড়, হাত পা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা লাগবে।
  • সাইক্লিং ও সাঁতার করা লাগবে।
  • দিন শুরু করতে হবে নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে।

কিভাবে পারকিনসন রোগ থেকে মুক্তি পাবেন

হাত পা কাঁপা, হাঁটাচলা অকারনেই ধীর হয়ে যাওয়া এবং শরীরের ভারসাম্যতা রক্ষা না করতে পারা হচ্ছে পারকিনসন রোগের লক্ষণ। সাধারণত বৃদ্ধ বয়সের রোগ হচ্ছে পারকিনসন। তবে কিছু ক্ষেত্রে কম বয়সে ও দেখা দিতে পারে পারকিনসন। পারকিনসন রোগের কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অজানা। অর্থাৎ ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায়, স্ট্রোক ও মস্তিষ্কের প্রদাহ (এনসেফ্যালাইটিস) ইত্যাদির জন্যেও পারকিনসন হবার সম্ভাবনা থাকে। এখন কিভাবে পারকিনসন রোগ থেকে মুক্তি পাবেন সে বিষয়ে জানতে হলে কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় সে বিষয়ে ভালোভাবে জানতে হবে।

আরো পড়ুনঃ পুরুষের অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

পারকিনসন কারো অল্প বয়সে দেখা দিলে উইলসন ডিজিজ নামের একটা রোগের কথা ও মাথায় রাখতে হবে আমাদের। পারকিনসন রোগ নির্ণয় করার জন্য রোগীর সমস্ত ইতিহাস চিকিৎসককে মনোযোগ দিয়ে শোনা লাগবে এবং প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা করা লাগবে। দীর্ঘমেয়াদি কোন ওষুধ সেবনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে পারকিনসন রোগ দেখা দিছে কিনা সেটাও ভালোভাবে দেখতে হবে। বেশিরভাগ সময় দুশ্চিন্তা কম করার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ কিংবা মানসিক রোগের ওষুধ দীর্ঘ সময় ধরে সেবন করার কারণে ও এই রোগ দেখা দিতে পারে।

প্রয়োজন হলে রোগের কারণ নির্ণয় করার জন্য মস্তিষ্কের এমআরআই পরীক্ষা করতে হতে পারে। পারকিনসন রোগ মস্তিষ্কের ডোপামিনের অভাবে হয়ে থাকে। সেজন্য এ রোগের চিকিৎসায় ডোপামিন জাতীয় ঔষধ খুবই কার্যকর। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পারকিনসন নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যার প্রত্যেকটার বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যদি ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া লাগবে। ওষুধের পাশাপাশি ব্যায়ামের ও গুরুত্ব অনেক।

পারকিনসন রোগের চিকিৎসার খরচ কত

এই রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করার সঠিক কোন প্রক্রিয়া এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে, এই রোগের ভ্যাকসিন ডাবলিনের United neuroscience নামে একটা সংস্থা আবিষ্কারের সক্ষম হয়েছেন। ২৪ জন রোগীর উপরে পরীক্ষামূলকভাবে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়ে থাকে এবং তা সফলতা পায়। এছাড়াও আরেকটা UB- 312 নামের ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করা শুরু হয়েছে। তবে পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁটাচলার সমস্যাকে দূর করার জন্য ভ্যাকসিন ছাড়াও স্টেম সেল রিপ্লেসমেন্ট এর মাধ্যমে ও চিকিৎসা নেওয়ার কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ সহবাসের করার কত সময় পর পিল খেতে হয়?

কেননা, ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসরণকারী কোষের মৃত্যু এই রোগে হয়ে থাকে এবং অঙ্গ সঞ্চালনের অক্ষমতা ও দেখা দিয়ে থাকে। এছাড়াও যে পদ্ধতিগুলো আছে, যেমন-ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ওষুধের সাহায্য নিয়ে কিছুটা সুস্থ থাকা যেতে পারে ও রোগটির অবস্থা বাড়তে দেখা গেলে অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে সাময়িকভাবে ভালো থাকা যেতে পারে।

এমনকি এই রোগ ফিজিওথেরাপির সাহায্য নিয়ে ও কিছুটা ভালো করা যেতে পারে। পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যের সাহায্য নিয়ে প্রতিদিনের কাজকর্ম করবার ক্ষমতা অনেকটাই ফিরে পেয়ে থাকেন। কেননা এই রোগের চিকিৎসা খরচ তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। পারকিনসন রোগের খরচ প্রায় ১২ লক্ষ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

শেষ কথাঃ কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয়

কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় পারকিনসন রোগ প্রতিরোধের উপায় কি সে সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় সে সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই কিসের অভাবে পারকিনসন রোগ হয় সে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url