করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম - করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা

 আপনারা কি করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম, করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা বা করমচা ফল খাওয়ার অপকারিতা ও করমচা ফল কিভাবে খায় সে সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করব করমচা ফলের গুনাগুন, করমচা ফল ইংরেজি বা করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম এবং করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা, করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম এবং করমচা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম - করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা

করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম| করমচা ফল কিভাবে খায়

করমচা টক জাতীয় একটা ফল, এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি। করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম বা করমচা ফল কিভাবে খায় সে সম্পর্কে এখন আলোচনা করব। করমচা নিয়মিত খেতে থাকলে মুখে রুচি ফিরে আসে। খাবারে রুচি যারা পাইনা তাদের জন্য প্রাকৃতিকভাবে সমাধানের উপায় করমচা হতে পারে। এছাড়াও করমচা উপকারে আসে আমাশয়, ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য। পটাশিয়াম যুক্ত এই ফল খাওয়ার ফলে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ করে শরীরে রক্ত স্বাভাবিক করে তোলে।

আরো পড়ুনঃ এই গরমে কিভাবে স্কিনের যত্ন নিবেন

সেই সাথে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে ও সহায়তা করে থাকে। যাদের কিডনিজনিত ও লিভার জনিত সমস্যা আছে করমচা তাদের নিয়মিত খাওয়া উচিত। করমচাতে থাকা কপার কোলাজেন সহায়তা করে থাকে উৎপাদনে। এবং লিভার ও কিডনির ক্ষতকে এই উপাদানটা সারিয়ে তোলে। পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি তে ভরপুর এই ছোট্ট ফলটা শারীরিক ক্লান্তি ভাব দূর করে থাকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভিটামিন সি বৃদ্ধি করে থাকে।

করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা | করমচা ফল খাওয়ার অপকারিতা

আমরা এখন করমচা ফল খাওয়ারউপকারিতা সম্পর্কে জানব। করমচা ছোট হলেও এটা অনেক উপকারী। করমচা ফল খাওয়ার অপকারিতা নাই বরং খেলে অনেক উপকার আছে। করমচা ফলের অপকারিতা বলতে গাছ অনেক ছোট। ঝোপঝাড় মনে হয় গাছ দেখে। তাছাড়া করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা বহু গুনে রয়েছে। চলুন তাহলে দেখে আসি করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা গুলো-

  • করমচাতে কোন ধরনের খারাপ কোলেস্টেরল ও ফ্যাট থাকে না।
  • করমচা কিছু ক্ষেত্রে কৃমির সমস্যা কমাতে অবদান রেখে থাকে।
  • করমচা পেটের সমস্যা দূর করতে এবং কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • টক স্বাদের এই ফলটাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে যা খাবারের রুচি ফেরানোর কাজে সাহায্য করে থাকে। বিশেষ করে আমাশয়, ডায়রিয়া বা জ্বর রোগীদের জন্য করমচা খুব ভালো কাজ করে থাকে।
  • শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তপাত রোধ করার ক্ষেত্রে গরম চা খুব উপকারী। করমচায়ে থাকা পটাশিয়াম ইলেকট্রনিটের কার্যকারিতা কে বৃদ্ধি করে থাকে।
  • শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতে করমচা সাহায্য করে থাকে।
  • কিডনি ও যকৃত রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
  • এছাড়াও পেটের বিভিন্ন অসুখের দাওয়াই করমচা।
  • করমচা শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে।
  • করমচাতে ভিটামিন এ থাকার কারণে চোখের জন্য খুব উপকারী হয়।

করমচা ফলের গুনাগুন| করমচা ফল ইংরেজি

করমচা টক জাতীয় ও আকারের ছোট হলেও এটা একটা মনোরম ফল। এর পুষ্টিগুণ অনেক রয়েছে। করমচা ফল ইংরেজি নাম Bengal currant বা Christ's thon বলা হয়ে থাকে। এবং করমচার বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ক্যারসসিসা কারান্ডাস। করমচা কাঁচা অবস্থাতে সবুজ থাকে এবং পাকার পর জমাট বাধা রক্তের মত লাল দেখায়। ফলটি জন্মে থাকে কাঁটাযুক্ত গুল্ম জাতীয় গাছে। ফুল আসে বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এবং ফল ধরে এপ্রিল মে মাসে। ফল পাকে পরবর্তীতে বর্ষায়।

আরো পড়ুনঃ মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি

১৪ গ্রাম শর্করা রয়েছে প্রতি ১০০ গ্রাম করমচাতে। ভিটামিন-এ ৪০ আইইউ, পটাশিয়াম রয়েছে ২৬০ মিলিগ্রাম, কপার রয়েছে ০.২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে ১৬ মিলিগ্রাম, আয়রন রয়েছে ১.৩ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন রয়েছে ০.২ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন রয়েছে ০.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি রয়েছে ৩৮ মিলিগ্রাম, ও প্রোটিন রয়েছে ০.৫ গ্রাম। পটাশিয়াম এর মাত্রা যাদের রক্তে বেশি আছে তাদের ক্ষেত্রে করমচা না খাওয়াটাই ভালো হবে।

করমচা চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গাতেই সমতল ভূমিতে করমচা চাষ করা হয়ে থাকে। করমচা চাষ করার জন্য পানি সেচ এবং সার খুব কম দেওয়া লাগে। সারা বছরের মধ্যে তিন মাস পরিচর্যা করলেই হয়। ৬ বছরের একটা গাছ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত গড়ে ফল পাওয়া সম্ভব। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে বছরে একবার ফল বাজারজাত করা হয়ে থাকে। মাত্র ২৬ টাকা হচ্ছে এক কেজি করমচা ফলের দাম। করমচা কে প্রসেসিং করে চেরি ফল হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হয়ে থাকে। করমচা চাষ পদ্ধতি গুলো চলুন দেখে নি-

মাটি ও জলবায়ুঃ শুষ্ক ও পরিবেশে করমচা ভালো হয়। এর চাষে গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়া বিশেষ উপযোগী। তবে এটা খোলা জায়গায় কিংবা ছায়া যুক্ত জায়গাতে ও চাষ করা হয়ে থাকে। বেলে দোআঁশ মাটি করমচা চাষের জন্য বিশেষ উপযুক্ত। মাটি কিছুটা ক্ষারীয় হলে করমচা চাষ করার জন্য সুবিধা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা করে কেন

জমিঃ প্রায় সব জায়গাতেই চাষ করা যায় করমচা। শুধুমাত্র জমি উঁচু এবং সমতল হতে হবে। জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা লাগবে। তবে করমচা নিচু জমিতে ও চাষ করা হয়ে থাকে। তবে সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন জমিতে পানি জমে না থাকে।

চাষের সময়ঃ করমচা গাছে ফুল আসে ফেব্রুয়ারি মাসে। আর ফল আসে এপ্রিল মাস থেকে মে মাসের মধ্যেই। তবে কখনো কখনো গাছে আবার প্রায় সারা বছর কম বেশি করমচা ধরে থাকে।

শেষ কথাঃ করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম - করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা

করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম এবং করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম এবং করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম এবং করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম এবং করমচা ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url