একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য - একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী

 

অজানাকে জানার ইচ্ছা প্রকাশ করা একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য। যে কোনো বিষয়বস্তু দেখা মাত্রই তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য। নিজের মনকে বিকশিত করে, নিজের দুর্বলতাকে দূর করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে সবার থকে আলাদা করে তোলা হলো একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য।

একজন আদর্শ ছাত্র হতে হলে অনেক বৈশিষ্ট্য এবং গুণাবলীর অধিকারী হতে হয়। নিজের পড়ালেখার পাশাপাশী তাদের ব্যবহার হয় খুব ভাল। কিভাবে একজন ভালো ছাত্র হওয়া যায়? একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী, একজন আদর্শ ছাত্রের রুটিন যদি আপনারা জানতে চান তাহলে আমাদের পোস্ট টি বিস্তারিত পড়েন। একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আজকে আমাদের পোস্ট টি সাজানো হয়েছে। 

সুচিপত্রঃ একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য - একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী 

একজন আদর্শ ছাত্রের রুটিন - একজন ছাত্রের দৈনন্দিন রুটিন

ছাত্রদের একটি দৈনিক রুটিন আছে যার জন্য তাদের তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে হবে। ভালো ঘুম মানুষের বিকাশের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। কোনো ছাত্র যদি কঠোর পরিশ্রম করে এবং সংগ্রাম করে তবে সে একজন ভাল ছাত্র হতে পারবে। ছাত্র জীবনে সফল হতে হলে একজন ছাত্রের দৈনন্দিন রুটিন থাকা দরকার। একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য হলো তারা সব কাজ নিয়মিত করবে তাদের রুটিন অনুযায়ী। 

একজন আদর্শ ছাত্রের রুটিন এর তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ

  • খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে 
  • দৈনিক কাজের লক্ষ্য নির্ধারণ করা
  • স্কুলে যাওয়ার আগে অধ্যায়গুলো পর্যালোচনা করতে হবে 
  • প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে 
  • একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য তার রুম পরিষ্কার রাখতে হবে
  • সময়মত হোমওয়ার্ক শেষ করতে হবে 
  • প্রতিদিন গণিতের ওপর একটু বেশী নজর দিতে হবে
  • রাতে তাড়াতাড়ি  খেয়ে  ঘুমাতে যেতে হবে

ছাত্র জীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য

একজন ছাত্র হিসাবে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। ছাত্র জীবনের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। তাদের নিজেদের পড়ালেখার পাশাপাশী আরো অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য ও একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী সব ভালভাবে জানতে হবে। 
ছাত্র জীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলোঃ 
  • সময়মতো এবং নিয়মিত ক্লাসেl যেতে হবে 
  • ক্লাসে যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় যত সরবরাহ লাগে সব ক্লাসে নিয়ে যাওয়া 
  • স্কুল এর সম্পত্তির ভালভাবে যত্ন নেওয়া 
  • ক্লাসের হোমওয়ার্ক, অ্যাসাইনমেন্ট সব নিয়মিত কমপ্লিট করা 
  • নিজেকে এবং অন্যদের সম্মান করতে হবে 
  • নিয়মিত পড়ালেখা করতে হবে 
  • ক্লাসের বাহিরে দায়িত্ব পালনের জন্য পর্যাপ্ত সময় বের করতে হবে
  • মানুষ, ধারণা এবং মতামতের বৈচিত্র্যকে সম্মান করতে হবে
  • নিজের ব্যক্তিগত আচরণের জন্য সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে
  • কলেজের সকল নীতিমালা মেনে নিতে হবে 
Participation (অংশগ্রহণ)
  • শ্রেণীকক্ষের সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা 
  • আলোচনা এবং দলগত কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে
  • ক্লাসে কিছু বুজতে না পারলে  শিক্ষকদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা
  • স্কুলের সব কাজে অংশগ্রহণ করা এবং আনন্দ করা 
  • স্কুলের সব বিনোদন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করা
মনোভাব
  • পিতামাতার মূল্যবোধ, প্রত্যাশা এবং সংস্কৃতি বোঝা
  • ভাল শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ব্যায়াম করা, সঠিক খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানো 
  • শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে 
  • সহযোগিতামূলক এবং বিবেচনাশীল হওয়া 
  • চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করা
  • অন্যদের সাহায্য করা 

ছাত্র জীবনের প্রকৃতি ও গুরুত্ব 

ছাত্র জীবনের গুরুত্ব আমাদের জীবনের অন্য সব সময়ের থেকে অনেক বেশি। ছাত্র জীবন হলো মানব জীবনের সোনালী সময়। সময় কারো জন্যে থেমে থাকেনা। ছাত্র জীবনের এই সময় অনেক মূল্যবান সময়। এই সময় নষ্ট করলে সারাজীবন আফসোস করতে হবে। ছাত্র জীবন হলো নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার এক সোনালী সময়। তাই ছাত্র জীবনের প্রকৃতি ও গুরুত্ব অনেক বেশী।

একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য - একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী

আজ ছাত্ররা যা শিখবে তা তাদের আগামী দিনে প্রতিফলিত হবে। একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন, যাতে তারা সমাজে ভাল আচরণ করতে পারে। আর ছাত্রদের ছোটো বেলা থেকেই একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী তাকে শিখাতে হবে কারন ছোটো বেলায় এসব শিখানো সহজ হয়। তাই আপনাকে অল্প বয়সেই বাচ্চাদের মধ্যে ভালো গুণাবলী গড়ে তুলতে হবে।

এখানে একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য এবং একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলীর ৩০ টি গুন নিচে আলোচনা করা হলো যা আপনাকে একজন আদর্শ ছাত্র হয়ে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে।

১। নিজের লক্ষ্য সেট করাঃ 
একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য এর  সবচেয়ে দরকারী গুনগুলোর মধ্যে একটি হলো জীবনের লক্ষ্য সেট করা। স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী উভয় লক্ষ্যই আপনাকে কিছু অর্জন করতে সহায়তা করবে। স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্যগুলির মধ্যে হলো আপনার স্কুলের গ্রেডিং সিস্টেমের উপর নির্ভর করে, প্রতিটি ক্লাসে  ন্যূনতম 90 এর উপরে মার্ক পেয়ে প্রতিটি সেমিস্টার শেষ করা। একটি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের উদাহরণ হলো একটি স্নাতক সম্মানের সাথে শেষ করা।

২। সবসময় অধ্যবসায় এর উপরে থাকাঃ 
আপনার বিষয় বা কোর্স যতই জটিল হোক না কেন, আপনি হাল ছেড়ে দেবেন না এবং হার মেনে নিবেন না। আপনি সর্বদা পর্যাপ্ত প্রচেষ্টা করে যাবেন এর ফলে আপনি একদিন অবশ্যই সফল হবেন।

৩। সময়ের মূল্য দেওয়াঃ
একজন ভালো ছাত্র কখনই ক্লাস মিস দেয় না। সময়ের মূল্য বজায় রাখা একটু কঠিন, কিন্তু আপনি যদি আপনার শিক্ষা থেকে জীবনের সব পেতে চান, তাহলে আপনি তাড়াতাড়ি স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এটি আপনাকে একটি ভাল ছাত্র হওয়ার পাশাপাশি স্কুলের প্রাথমিক ক্যুইজ এবং অন্যান্য ইভেন্টগুলি তে আপনি কোনো ভয় ছাড়া খুব সহজে যোগ দিতে পারেন। আর এটা একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য। 
৪। বিনয়ী হতে হবেঃ 
আপনার শিক্ষকদের, স্কুলের কর্মীদের এবং সহপাঠীদের সাথে ভাল ব্যবহার করা প্রমাণ করে যে আপনি একজন ভাল ব্যক্তি। তাই একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলীর মধ্যে এটা যোগ করে নিতে হবে। সব মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে।

৫। সম্মানের অনুভুতি থাকতে হবেঃ 
ভাল ছাত্ররা সর্বদা জাতির, সমাজের এবং স্কুলের আইনের পাশাপাশি সামাজিক রীতিনীতির প্রতি সম্মান করে। যে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা বিনা পরিশ্রমে উন্নতি লাভ করে, তারা দেশের জন্যে ভাল কিছু করতে পারেনা। আইন অনুসরণ করা ছাড়াও, ভাল ছাত্ররা তাদের শিক্ষক এবং সহপাঠীদের প্রতি সম্মান রাখে।

৬। দায়িত্বশীল হতে হবেঃ 
একজন ভালো শিক্ষার্থীর পাশাপাশি জীবনে ভাল কিছু করার অন্যতম গুণ হলো দায়িত্ব। তারা কখনই তাদের ভুল কে অজুহাত দিয়ে এড়িয়ে যায় না। ফলে তারা তাদের কাজের জন্য সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করে এবং তাদের কর্মের পরিণতি স্বীকার করে। ভাল ছাত্ররাও স্কুলে থাকাকালীন তাদের চরিত্রের বিকাশের দায়িত্ব নেয় যাতে তারা সফল দক্ষতার সাথে স্নাতক হতে পারে।

৭। সবসময় সৎ থাকতে হবেঃ
প্রতারকরা ভাল ছাত্র তৈরি করে না, তাই আপনার প্রতারক বন্ধুদের থেকে দূরে থাকুন। পরীক্ষা হল আপনার জ্ঞানের মূল্যায়ন করার একটি পদ্ধতি। তাই সৎ ভাবে পরীক্ষা গুলো দিন এবং আপনার জীবনের লক্ষ্য পূরণ করুন।

৮। প্রতিযোগিতা মূলক মনোভাবঃ  
এর অর্থ এই নয় যে আপনার সমবয়সীদের প্রতিযোগী হিসাবে বিবেচনা করা উচিত। প্রতিযোগিতামূলক হওয়া বোঝায় যে আপনি আপনার ক্লাসের কোনো কঠিন কাজ করার চেষ্টা করবেন। যদি আপনার শিক্ষক একটি কঠিন গণিত সমাধান করতে দেয়, তাহলে আপনি অন্যদের এটি বের করার আগে আপনি নিজেই এটি সমাধান করার চেষ্টা করুন। এটা অন্যতম একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য।

৯। বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণঃ 
একজন ভাল ছাত্র একজন ভাল এবং সুন্দর ব্যবহারের ব্যক্তি। আপনার সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে হবে কারন আপনি যখন ক্লাসে লেখাপড়ায় ভাল হলে তারা আপনাকে খারাপ ভাবে দেখবে না। তাছাড়াও ক্লাসে সহপাঠীদের সাথে ভাল সম্পর্ক থাকলে পড়ালেখায়ও অনেক সাহায্য করবে। 

এই উভয় উপায়ে নিরাপত্তাহীনতা নিজেকে প্রকাশ করে। একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী হল যে সে তার সমবয়সীদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তাদের সাফল্যের জন্য কখনো তাদের হিংসা করে না।

১০। ধৈর্য থাকাঃ 
আপনি যদি মেধাবী না হন তবে আপনার পড়াশোনা নিজের আয়ত্ত করতে অনেক কঠিন হতে পারে। হতাশ হওয়ার পরিবর্তে, আপনাকে আপনার অগ্রগতির সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে হবে, তা যতই কঠিন হোক না কেন। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি শিখতে এবং নতুন জিনিস জানতে চেষ্টা চালিয়ে যান. একদিন সফল হবেন ইনশাল্লাহ।

১১। কঠোর পরিশ্রমঃ 
ভাল ছাত্ররা কোনো কিছু বুজতে না পারলে তাদের শিক্ষকদের উপর নির্ভর না করে, বিভিন্ন বিষয়ের মেধা অর্জন করতে এবং একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একটি বিষয় দেখতে ব্যাপকভাবে অনলাইনে গবেষণা করে এবং অনেক প্রস্তাবিত বইয়ের মাধ্যমে তাদের সমস্যা দূর করার চেষ্টা করে। এই সব শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যেতে পারে।

১২। মনোযোগী হওয়াঃ 
শ্রেণীকক্ষে যা পড়ানো হয় তার প্রতি মনোযোগী হওয়া একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য। শিক্ষক যখন ক্লাসে কোনো টপিক বোঝানোর চেষ্টা করে তার উপর গভীরভাবে মনোনিবেশ করতে হবে, যা আপনার পড়ালেখায় সাহায্য করে। আর যদি ক্লাসে মনোযোগ না দিয়ে শুনলে পরে সেই বিষয়টা বুজতে সমস্যা হয়। এটি বিষয়গুলি বুঝতে খুব সহজ করে তোলে।

১৩। ব্যালেন্স থাকাঃ 
একজন ভাল ছাত্রের জীবনে ব্যালেন্স থাকা খুব দরকার। আপনার মনে রাখা উচিত যে আপনার জীবনে অন্যান্য দায়িত্ব রয়েছে ভাইবোন বা বন্ধু দের ওপর। নিশ্চিত করুন যে আপনি এখনও বাড়ির কাজে সহায়তা করতে পারেন, আপনার পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পারেন এবং অনুষ্ঠানে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারেন। ভারসাম্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

১৪। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশী বিভিন্ন কার্যকলাপে অংশগ্রহণঃ 
অ্যাথলেটিক্স, শিল্পকলা বা অন্য যেকোন ধরনেরই হোক না কেন  ক্লাসের পড়ালেখার পাশাপাশী বিভিন্ন  ক্রিয়াকলাপ গুলিতে অংশগ্রহণ করতে হবে। কারণ এই ক্রিয়াকলাপ গুলি একজন শিক্ষার্থীর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এসব বইয়ের বাহিরের কাজ গুলি দুর্বল ছাত্রদের পড়ালেখার দিকে আগ্রহী হয় আর ভাল ছাত্র রা আরো বেশি সক্রিয় হয়। 

১৫। একজন ভাল শ্রোতাঃ 
একজন ভালো শ্রোতা একজন ভালো শিক্ষার্থীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণ। শ্রেণীকক্ষে একজন ভাল ছাত্র হিসেবে শিক্ষকের সব কথা ভালভাবে শুনতে হবে। তার বাবা-মা এবং শিক্ষকদের কথায় মনোযোগ দেওয়া উচিত এবং তাদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা উচিত। ক্লাসে কী পড়ানো হচ্ছে তা বোঝার জন্য একজন শিক্ষার্থীর ভালো শ্রোতা হতে হবে।  

১৬। সরল মানুষিকতাঃ  
তাদের মন কতটা জটিল তার কারণে, ছাত্ররা প্রায়শই তাদের শেখানো বিষয়গুলি বুঝতে পারেনা। এটা অবশ্য ভালো ছাত্রদের ক্ষেত্রে হয় না। একজন ভাল শিক্ষার্থী তাদের চিন্তা ভাবনা সহজ রাখে, কঠিন বিষয়গুলিকে ভেঙে ফেলার এবং দ্রুত সমাধান করার ক্ষমতা থাকে।

১৭। টিম বানিয়ে পড়ালেখাঃ
অনেক সময় আপনাকে আপনার সহপাঠীদের সাথে টিম কার্যক্রমে কাজ করতে হয়। আপনি যদি প্রতিটি পারফরম্যান্সের জন্য একটি ভাল ফলাফল চান, তাহলে আপনাকে তাদের সাথে সহযোগিতা করতে হবে। আপনার টিম মেটদের একসাথে পড়ালেখা আপনাকে আরো ভাল ছাত্র তৈরি করবে।এটা  একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী হিসেবে ধরা যায়।  

১৮। আত্মবিশ্বাসীঃ
আপনি ক্লাসে আপনার মনোভাব প্রকাশ করতে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে, বা একটি স্কুল সংস্থায় যোগ দিতে দ্বিধাবোধ করবেন না। আপনাকে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। 

১৯। মিতব্যয়ীঃ 
যেহেতু আপনি এখনও আপনার নিজে কোনো অর্থ উপার্জন করেন না, তাই আপনার পিতামাতা বা আপনাকে সমর্থনকারী যে কারো কাছ থেকে পাওয়া অর্থ খুব মিতব্যয়ী হিসেবে খরচ করুন। আপনি যদি নিজের খরচ নিজে চালানোর জন্যে একটা পার্ট টাইম চাকরি করেন, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন টাকা উপার্জন করা কতটা কঠিন।  

২০। স্বনির্ভরশীলঃ 
একজন স্বনির্ভর শিক্ষার্থী স্বাধীন ভাবে তার লেখাপড়া করতে পারে। একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য হলো নিজের পড়ালেখার পাশাপাশী একটা পার্ট টাইম জব করা উচিত।

২২। প্রার্থনামূলকঃ 
নিজের সাথে সাথে আপনাকে আল্লাহ্‌র ওপর ও ভরসা রাখতে হবে কারন তিনি ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারবনা, তাহলে আপনাকে অবশ্যই তাকে স্বীকার করতে এবং সুকরিয়া আদায় করতে ভুলবেন না। এছাড়াও, আপনি যা কিছু করেন তার জন্য আপনি আল্লাহ্‌র কাছে অবিরাম নির্দেশনা এবং শক্তি চাইতে পারেন।

২৩। তারা সফলতার ব্যাপারে খুবই আশাবাদীঃ
ভাল ছাত্ররা সবসময় নিজদের সফলতার ব্যপারে খুবই আশাবাদী থাকে কখনো নিজের ওপর থেকে ভরসা হারিয়ে ফেলে না। সে মনে মনে সবসময় নিজের সফলতা নিয়ে কনফিডেন্ট থাকে। কিভাবে একজন ভালো ছাত্র হওয়া যায় তার অন্যতম একটা উপায় এটা।

২৪। তারা খুব স্মার্ট হয়ঃ 
ভাল ছাত্ররা শুধু পরালেখায় নয় তারা সব দিক থেকেই স্মার্ট হয়। এটা একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য যা সব ভাল ছাত্রদের মধ্যে থাকা উচিত। 

২৫। স্ব-শৃঙ্খলাঃ 
ছাত্র জীবনে শৃঙ্খলা বজায় রাখা অপরিহার্য। এই গুণটি তাদের কাজ পরিচালনা করতে, কাজের নিয়ম বজায় রাখতে এবং তাদের সময়কে ভালভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করে।

২৬। সময়ের সদ্ব্যবহার করাঃ
সময় কারো জন্যে থেমে থাকে না। তাই সময়ের সঠিক মূল্য দিয়ে সময়ের কাজ সময়ে করা একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য। ভাল ছাত্ররা কখনো সময় নিয়ে আফসোস করে না। আজকের কাজ কালকের জন্যে ফেলে রাখে না। তাই সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে।

২৭। সঠিক পরিকল্পনা করা এবং তা বাস্তবায়ন করাঃ
ছাত্র জীবনে প্রতিটি কাজ এর পরিকল্পনা করা উচিত। কখন কোন পড়াটা করবেন এবং পুরানো কোন পড়াটা আর একবার রিভিউ করতে হবে। আবার কোনো পড়া যদি কঠিন মনে হয় তার জন্যে এক্সট্রা সময় বের করতে হবে। পরিকল্পনা না করে একটার পর একটা বই পরলে হবে না তাই সঠিক পরিকল্পনা করা উচিত।

২৮। নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করাঃ 
নিজেকে একজন আদর্শ ছাত্র গড়ে তুললেই শুধু হবে না। নিজের ব্যক্তিত্ব কে মানুষের কাছে প্রকাশ করতে হবে। যেন মানুষ আপনি কেমন তা জানতে পারে। আর এটা সম্ভব শুধু শিক্ষা দিয়ে। কিভাবে একজন ভালো ছাত্র হওয়া যায় তার এটা একটা উপায়। 

২৯। নিয়মিত অনুশীলন করাঃ 
সারাদিন পড়লেই শুধু ভাল ফলাফল করা যায় না। পড়ালেখা তো সবাই করে কিন্তু ভাল ফলাফল করতে হলে বারবার অনুশীলন করতে হয়। ফলে সেই পড়া একজন ছাত্রের মাথায় খুব ভাল ভাবে সেট হয়ে যায় এবং সে ভাল ফলাফল করতে পারে।

৩০। কমিটমেন্টঃ 
একজন ভাল ছাত্রের মধ্যে এই গুন টি থাকতে হবে। ফলে একজন ছাত্র নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে নিজের বইয়ের পাশাপাশি অন্য সব ধরনের কাজ করতে পারে এর কারনে তার ফলাফল ও অনেক ভাল হয়। 

কিভাবে একজন ভালো ছাত্র হওয়া যায় জানুন 

  • আপনি যা করছেন তা ভালোবাসুন।
  • আত্মসম্মান বজায় রাখুন।
  • স্কুলে ভালো বন্ধু বাছাই করুন।
  • ক্লাসের আলোচনায় মনোযোগ দিন।
  • আপনার লক্ষ্য সেট করুন। 
  • সময় এর মূল্য দিন এবং সর্বদা উপস্থিত থাকুন। 
  • স্কুলের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন। 
  • লাইব্রেরিতে যান এবং পড়ুন।
  • ভাল কিছু দেখে অনুপ্রাণিত হন।
  • সামনে বসুন।
  • আপনার পূর্ববর্তী পাঠ পড়ে রাখুন। 
  • একটি রুটিন তৈরি করুন।
  • আপনার স্বাস্থ্যের ভাল যত্ন নিন।
  • আপনার সময় কিভাবে পরিচালনা করবেন তা নির্ধারন করুন।
  • ক্লাসের পড়া মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং নোট করুন।
  • আপনার পিতামাতাকে সম্মান করুন। 
  • আপনি যথাসাধ্য চেষ্টা করুন এবং আল্লাহ্‌ বাকিটা করবেন। 

ছাত্র জীবনের কিছু ভুল যা এড়িয়ে চলা উচিত - ছাত্র অবস্থায় আমরা যেসব ভুল করি

  • পড়া এড়িয়ে যাওয়া 
  • বিভ্রান্তিকর পরিবেশে কাজ করার চেষ্টা করা
  • না বুঝে মুখস্থ করা
  • নিয়মিত না ঘুমানো 
  • সকালের নাস্তা না করা
  • মিউজিক রিভাইসিং
  • আপনার মানসিকতা স্থির না করা 
  • আপনি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেন না
  • আপনার জ্ঞান শুধু শিক্ষাবিদদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা

একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য - উপসংহার 

একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য, একজন আদর্শ ছাত্রের গুণাবলী এবং কিভাবে একজন ভালো ছাত্র হওয়া যায় তা অনেক ভাবে আলোচনা করা হয়েছে আজকের আমাদের এই পোস্ট এ। একজন ভাল ছাত্র হতে হলে আপনাদের মধ্যে এই সব থাকতে হবে না হলে আপনারা একজন ভাল ছাত্র হতে পারবেন না। আমরা চেষ্টা করেছি একজন ভাল ছাত্র হতে হলে আপনার কি করা প্রয়োজন তা বিস্তারিত জানাতে আশা করছি আপনাদের একটু হলেও সাহায্য হবে। [জব আইডি=22498 ]
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url