একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় - ভালো ছাত্র হওয়ার উপায়

 

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় বা ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানা খুব জরুরী একজন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং মা বাবার জন্যে। একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় তা আজ আমরা আমাদের পোস্ট এ বিস্তারিত আলোচনা করবো। যদি আপনারা একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় জানতে চান পোস্ট টি পড়ুন। 

দুর্বল শিক্ষার্থীর উন্নতির জন্যে তাদের একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি বাহিরের অনেক ধরনের বই ও পড়তে হয়। এছাড়াও নিজের ক্লাস এর বাহিরে এক্সট্রা ক্লাস, কোচিং, প্রাইভেট টিউশন নিতে পারে। একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়? আরো বিস্তারিত জানতে নিচে পড়ুন।

সূচিপত্রঃ একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়

একটি আদর্শ শিখানোর কৌশল কি? 

একটি আদর্শ শিখানোর কৌশল হল একটি পাঠ বা বিষয়ের জন্য একটি সাধারণ পরিকল্পনা বা প্রোগ্রাম আগে থেকে করে রাখা। একটি আদর্শ শিক্ষণ কৌশল অনুসরণ করলে, এটি ছাত্র এবং শিক্ষকদের মধ্যে একটি শক্তিশালী এবং ভাল যোগাযোগ মূলক সম্পর্ক তৈরি করবে।

আপনি যদি শুধুমাত্র একটি শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে লেগে থাকেন এবং বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার না করেন, তাহলে বিষয়টিকে সামলানো বা আয়ত্ত করা শিক্ষার্থীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। যেহেতু প্রতিটি শিক্ষার্থী আলাদা, এবং তাদের বোঝার ক্ষমতাও আলাদা কারো বেশি কারো কম। একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এটার একটি প্রয়োজনীয় দিক হলো একজন শিক্ষকের আদর্শ শিখানোর কৌশল। 

কিভাবে একটি ক্লাসে দুর্বল শিক্ষার্থী সনাক্ত করা যায়

দুর্বল ছাত্র হলো যারা কম একাডেমিক অর্জনকারী। যারা একাডেমিক লেখা ও পড়ার প্রতি কম আগ্রহী। দুর্বল ছাত্র পড়ালেখায় খুব একটা আগ্রহ দেখায় না। সে তার কাজ সময়মতো শেষ করতে চাই না। একজন দুর্বল শিক্ষার্থী পরীক্ষায় সবসময় কম নাম্বার নিয়ে আসে। কিন্তু আমরা যদি ছোটো থেকে এইরকম ছাত্রদের একটু বিশেষ যত্ন নিয়ে থাকি এবং তাদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করি তাহলে একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় তা জানতে পারবেন। 

আরো পড়ুনঃ আদর্শ শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য - আদর্শ শিক্ষকের সংজ্ঞা

অনেক সময় অভিভাবক ও কিছু শিক্ষক এর জন্যে অনেক বাচ্চারা পড়ালেখায় দুর্বল হয়ে পড়ে। আমরা ছোটো থেকেই তাদের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহী করে তুলি না। আমরা আমাদের সন্তানদের ভালভাবে পর্যবেক্ষন করিনা। ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় সম্পর্কে তাদের সতর্ক করে না। 

আমরা আমাদের শিশুদের সঠিক পথে, সঠিক সময়ে, সঠিক বয়সে বিকাশের যথেষ্ট সুযোগ দিতে পারিনা। আমরা যদি ছোটো থেকে তাদের মেধাবী হওয়ার উপায়, একজন ভালো ছাত্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানায় তাহলে তারা একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় তা নিজে থেকেই শিখতে পারবে।

শ্রেনীকক্ষে দুর্বল ছাত্রদের কিভাবে পরিচালনা করা যায়

শিক্ষক ও পিতামাতার অবশ্যই আমাদের সন্তানদের সামর্থ্যের ওপর ভরসা রাখতে হবে। আমাদের তাদের সাথে বসতে হবে এবং মন খুলে কথা বলতে হবে। আমাদের তাদের ভিতরের ক্ষমতা খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সাথে বন্ধুর মতো মিশতে হবে এবং তাদের প্রতি এক্সট্রা খেয়াল নিতে হবে। 

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এবং ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় সম্পর্কে তাদের জানাতে হবে। তাদের পড়ালেখার ওপর আগ্রহ নিয়ে আসতে হবে। তাদের নিজের একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশী বাহিরের অনেক ধরনের বই পরার জন্যে তাদের আগ্রহী করতে হবে। এছাড়াও তাদের ক্লাস রুম এ সবসময়ই আগে বসাতে হবে।

কেন এবং কোথায় তাদের পড়ালেখায় সমস্যা হয় 

একজন শিক্ষক হিসেবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের বোঝা ও পড়ালেখা ভালভাবে বিশ্লেষণ করা জরুরী যে কোন ক্ষেত্রে বা বিষয়ে তাদের কোনো সমস্যা আছে কিনা। তাদের সাথে কথা বলতে হবে। আপনি তাদের শক্তি এবং দুর্বলতার সাথে যত বেশি পরিচিত হবেন, তত বেশি আপনি জানতে পারবেন যে তাদের সমস্যা কোথায় এবং তাদের সাহায্য করতে পারবেন। 
খুব ভালভাবে খেয়াল করলে আপনি যেসব জানতে পারেনঃ
  • তাদের মাঝে শৃংখলার অভাব
  • শেখার সুযোগ কম
  • বাড়ির পরিবেশ এর অবস্থা খারাপ
  • জটিল অধ্যায়ন
  • পড়ার অনেক বিষয় বুজতে না পারা
  • বিভিন্ন বিষয়ে টেনশন 

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় জানুন

কিছু শিক্ষার্থীর পড়ালেখা আঁকড়ে ধরার এবং অনেক্ষন মুখস্থ করার ক্ষমতা বেশী এবং কারো কম। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই ধরনের শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। শিক্ষকদের তাদের চাহিদা অনুযায়ী যত্ন নেওয়া উচিত। দুর্বল ও ধীরগতির শিক্ষার্থীদের একটু বিশেষ যত্ন নিতে হবে। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে ভালভাবে জেনে তাদের খেয়াল রাখতে হবে। 

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় তা পর্যবেক্ষণ করে দুর্বল শিক্ষার্থীর ওপর বেশি বেশি যত্নশীল হতে হবে। তাদের ক্লাস রুম এ শাস্তি দেওয়া যাবে না। ভালভাবে বুঝিয়ে তাদের মাথায় পড়া ঢোকাতে হবে।

একা একা শেখানোঃ দুর্বল শিক্ষার্থীরা সাধারণত বুদ্ধিমানদের মতো পদ্ধতিতে শিখালে তারা বুঝতে পারে না। দুর্বল শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষকদের পড়ানো বুজতে পারে সে জন্য শিক্ষকরা দুর্বল শিক্ষার্থীদের প্রতি আলাদা মনোযোগ দিতে পারেন এবং ফাঁকা সময়ে স্কুলে তাদের পড়াতে পারেন। এটি দুর্বল শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ধারণা আরও বাড়াতে সহায়তা করে ।

দুর্বল শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করুনঃ দুর্বল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষকদের অবশ্যই এই শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে যাতে তারা পড়ালেখা করতে এবং ভাল পারফর্ম করতে অনুপ্রাণিত হয়। যখন দুর্বল ছাত্রদের তিরস্কার করা হয় এবং তারা যা করে তার জন্য প্রশংসা করা হয় না, তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে এবং পড়াশোনা থেকে দুরে চলে যায়। দুর্বল শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা তাদের ভাল পড়ালেখা করার আত্মবিশ্বাস এনে দেয়।    

সময় মতো হোম ওয়ার্ক শেষ করাঃ এটি দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দুর্দান্ত টিপ যাতে তারা আরও ভাল পারফর্ম করতে পারে। দুর্বল শিক্ষার্থীরা সাধারণত সময়মতো তাদের হোম -ওয়ার্ক বা বাড়ির কাজ শেষ করে না এবং তাই ক্লাসের পড়াগুলো ভালভাবে জানতে পারেনা। 

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় তার একটা উপায় শিক্ষার্থীরা যদি সময়মতো তাদের  বাড়ির কাজ শেষ করে তবে তারা ক্লাসে কী পড়ানো হয় তা ভালভাবে বুঝতে পারে এবং তারা পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকবে না। এটি তাদের শিক্ষায় আরও ভাল করতে সাহায্য করবে এবং এটা একটি ভালো ছাত্র হওয়ার উপায়। 

মনোযোগ সহকারে যোগ দিতে হবেঃ দুর্বল শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ভালো করার জন্য মনোযোগ সহকারে ক্লাসে যোগ দিতে হবে। যখন তারা ক্লাসে যা শেখানো হচ্ছে তার প্রতি মনোযোগ দেয়, তারা ক্লাসে পড়ানো বিষয় গুলো ভালভাবে জানতে পারে এবং বুদ্ধিমান শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হয়। 
জীবনের লক্ষ্য এবং প্রতিদিনের রুটিন সেট করতে হবেঃ দুর্বল শিক্ষার্থীদের অবশ্যই  তাদের জিবনের লক্ষ্যগুলি নির্ধারণ করতে হবে এবং এটি করার জন্য একটি সময়সূচী সেট করতে হবে। লক্ষ্য নির্ধারণ করা একটি ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় এবং তাই তারা আরও ভালভাবে পড়াশোনা করে। একটি সময়সূচী অনুসরণ করা নিশ্চিত করে যে দুর্বল শিক্ষার্থীরা শুধু একটি বিষয় নয় সব বিষয়েই অধ্যয়ন করে। 

সব সময় পজিটিভ থাকতে হবেঃ দুর্বল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলের প্রতি পজিটিভ মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় যে দুর্বল শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পছন্দ করে না এবং পাশাপাশি পড়াশোনা করতেও পছন্দ করে না। এই শিক্ষার্থীদের একটি পজিটিভ মনোভাব গড়ে তুলতে হবে এবং তাদের অবশ্যই কিছু আনন্দ বা উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে স্কুলে নিয়ে আসতে হবে এবং পড়াশোনা করতে অনুপ্রাণিত করতে হবে।   

শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি করাঃ দুর্বল শিক্ষার্থীরা স্কুলে শিক্ষকদের পাশাপাশি তাদের সহপাঠীদের থেকেও দূরে সরে যায়। এর কারণ তারা স্কুল এবং পড়ালেখা থেকে দূরে চলে যায়। দুর্বল শিক্ষার্থীদের অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে শিক্ষক এবং তাদের সহপাঠীদের সাথে বন্ধন তৈরি করার। যাতে তারা যখনই প্রয়োজন তখন তাদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারে এবং এটা একটা ভালো ছাত্র হওয়ার উপায়। 

সহপাঠ্য ক্রমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন করাঃ দুর্বল শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সহপাঠ্য ক্রমিক কার্যক্রমে  অংশগ্রহণ করতে হবে কারণ এই কাজগুলো শিক্ষার্থীদের অন্যান্য সহপাঠীদের সাথে একটি বন্ধন তৈরি করে এবং তাদের পড়ালেখার দিকে চালিত করে। এই কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের তাদের মস্তিষ্ককে কাজে লাগায় এবং তাদের আরও স্মার্ট এবং তীক্ষ্ণ করে তুলতে সাহায্য করে।

প্রাইভেট টিউশনঃ একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় তার আর একটি টিপ হলো দুর্বল ছাত্রদের ভাল পারফর্ম করতে সাহায্য করতে পারে তা হল তাদের অনলাইন বা অফলাইনে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রাইভেট টিউশনে যোগদান করা। বিশেষজ্ঞ টিউটরদের দ্বারা দুর্বল ছাত্রদের জন্য প্রাইভেট  একটা ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় এবং এই ছাত্ররা পড়ালেখা খুব ভালভাবে জানতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আরও ভাল পারফর্ম করতে সহায়তা করে।  

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়ঃ উপসংহার 

দুর্বল শিক্ষার্থীরাও লেখাপড়া ভাল করতে পারে যদি তাদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় ও ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় সম্পর্কে আজ আমরা অনেক উপায় আলোচনা করেছি। আশা করি আমাদের এই পোস্ট পড়ে খুব ভালভাবে জানতে পারবেন একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়। job id=22498

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url