ভূমিকম্প হলে করণীয় কি - ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়
হ্যালো বন্ধুরা ভূমিকম্প হলে করণীয় কি আপনারা কি সে সম্পর্কে জানেন? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্ট আপনার জন্য কেনো না আজকে ভূমিকম্প হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে আলোচনা করবো। অনেক সময় আমাদের দেশে ভূমিকম্প দেখা দেই। কোন সময় হয়তো এই ভূমিকম্প ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে তখন ভূমিকম্প হলে করণীয় কি কি করা উচিত নয় সে সম্পর্কেও আপনার জেনে থাকা উচিত।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে ভূমিকম্প হলে করণীয় কি সেই
সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে ভূমিকম্প হলে করণীয় কি
- ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আলোচনা শুরু করা যাক।
কনটেন্ট সূচিপত্রঃ ভূমিকম্প হলে করণীয় কি - ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়
- ভূমিকম্প নিয়ে কিছু কথাঃ ভূমিকা
- ভূমিকম্প হলে করণীয় কি - ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়
- ভূমিকম্পের সময় কি কি করা উচিত নয়
- বাংলাদেশে ভূমিকম্পের কারণ ও উৎস
- ভূমিকম্প হওয়ার কারণ কয়টি
- উপসংহারঃ ভূমিকম্প হলে করণীয় কি - ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়
ভূমিকম্প নিয়ে কিছু কথা
অনেক সময় আমাদের দেশ কেঁপে ওঠে তখন আমরা বলি ভূমিকম্প হচ্ছে। আপনি কি জানেন
ভূমিকম্প সম্পর্কে? ভূমিকম্প হলে করণীয় কি? তাহলে আজকের এই পোস্টের আপনি জানতে
পারবেন। তার জন্য আপনাকে সম্পূর্ণ পোস্টে আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। এই পোস্টে আপনি
বাংলাদেশে ভূমিকম্পের কারণ ও উৎস সম্পর্কেও জানতে পারবেন তার সাথে ভূমিকম্প হলে
করণীয় কি এবং ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আগে
ভূমিকম্প নিয়ে কিছু কথা জেনে নেই।
আরো পড়ুনঃ ব্লগারের লগইন ইমেইল পরিবর্তন করার নিয়ম
ভূমি কম্পন এর অর্থ হচ্ছে ভূমি কেঁপে ওঠা। ভূপৃষ্ঠের নিচে একটি শিলা যখন অন্য আরেকটি শিলার উপরে উঠে যায় তখন ভূমির যেই কম্পন সৃষ্টি হয় তাকেই ভূমিকম্প বলে। পৃথিবীর সকল জায়গায় যে একসাথে ভূমিকম্প হয় এমনটা নয় বিভিন্ন জায়গায় হতে পারে আবার অনেক জায়গায় নাও হতে পারে। হঠাৎ করে যখন আমাদের ঘরের জিনিসপত্র কাঁপতে থাকে। আমরা যে দালানকোঠায় রয়েছি সেটিও কাঁপতে থাকে তাহলে তাকে ভূমিকম্প বলে।
ভূমিকম্প হলে করণীয় কি - ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়
বাংলাদেশেও অনেক সময় ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে বাংলাদেশ
কখনো ভয়াবহ ভূমিকম্পের শিকার হয়নি। কিন্তু আমরা অনেক সময় খবরের শুনে থাকি যে
বিভিন্ন জায়গায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে সেখানকার দালানকোঠা রাস্তাঘাট সবকিছু
ভেঙ্গে পড়েছে। যদি কখনো আমাদের সাথে এরকম হয় তাহলে ভূমিকম্প হলে করণীয় কি এই
সম্পর্কে আমাদের জেনে থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাহলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি
ব্যবস্থা নিতে পারবেন এবং নিজের জীবন বাঁচাতে পারবেন। তাহলে চলুন ভূমিকম্প থেকে
বাঁচার উপায় জেনে নেই।
ফাঁকা স্থানে আশ্রয় নেওয়াঃ
আপনি যদি কখনো বুঝতে পারেন যে আপনার শরীর নড়াচড়া করছে তার সাথে আপনার ঘরের
আসবাবপত্র এবং বিল্ডিংসহ নড়াচড়া করছে তাহলে দেরি না করে খুব তাড়াতাড়ি ফাঁকা
স্থানে অথবা উন্মুক্ত কোন স্থানে আশ্রয় নেবেন।
শক্ত আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নেওয়াঃ
আমরা অনেক সময় বড় বিল্ডিং এ থাকি তখন হঠাৎ করে ভূমিকম্প হলে বের হওয়া অনেক
কষ্টকর। তখন আপনি আপনার ঘরের জানালা দরজার পাশে অবস্থান না নিয়ে টেবিল অথবা
আপনার খাটের নিচে অবস্থান নেবেন। শক্ত কোন কিছুর নিচে অবস্থান নেবেন।
এক জায়গায় অনেক মানুষ জমা হয় না থাকাঃ
বড় বিল্ডিংএ থাকার সময় এই বিষয়টি বিশেষ করে লক্ষ্য করবেন। বিল্ডিং এর সকল
মানুষ এক জায়গায় কখনো উপস্থিত হবেন না। সকলেই আলাদা আলাদা জায়গায় অবস্থান
করবেন।
পরিস্থিতি মোকাবেলা করাঃ
এই সময়ে অনেকেই বেশি দুশ্চিন্তা করে এবং বিল্ডিং এর মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে। তাই
ধৈর্যধারণ করবেন এবং সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন।
ফায়ার সার্ভিসের নাম্বার মোবাইলে সেভ রাখুনঃ
এসকল পরিস্থিতি থেকে ফায়ার সার্ভিস আমাদের উদ্ধার করে থাকে। তাই ফায়ার
সার্ভিসের নাম্বার অবশ্যই আপনার মোবাইলে থাকা উচিত। এতে বিভিন্ন রকম বিপদের সময়
কাজে দেবে।
মাথায় শক্ত কোন কিছু ধরে রাখুনঃ
আমরা জানি যে মাথা হল সব কিছুর মূল। তাই সব সময় আমাদের আগে মাথা বাঁচানোর
চেষ্টা করতে হবে। এর জন্য আপনি এই পরিস্থিতিতে মাথাতে শক্ত কোন কিছু ধরে
রাখুন।
আরো পড়ুনঃ মাথার পিছনে ব্যথার কারণ - মাথার পিছনে ডান পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ
বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে দূরে থাকুনঃ
ভূমিকম্পের সময় এই জিনিসটি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখবেন। বৈদ্যুতিক অথবা গ্যাস
সিলিন্ডার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
উচু বিল্ডিং থেকে দূরে থাকুনঃ
আপনি যদি বাইরে থাকেন তাহলে উঁচু গাছ পালা, উচু বিল্ডিং, বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে
সর্বদা দূরে থাকুন। অবশ্যই খোলা মাঠে অবস্থান করবেন। এটি সব থেকে নিরাপদ।
ভাঙ্গা দেওয়ালের নিচে থাকলে বেশি নড়াচড়া না করাঃ
যদি দাঁড়ান ভেঙ্গে আপনি দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে যান তাহলে বেশি নাড়াচাড়া
করবেন না। এটি আপনার জন্য বিপদজনক হতে পারে কারণ শ্বাসনালীতে ধুলোবালি ঢুকে যেতে
পারে।
খালি জায়গায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুনঃ
ভূমিকম্প থেমে যাওয়ার পর আবার কিছুক্ষণ পর শুরু হতে পারে। তাই ফাঁকা মাঠে
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন তারপর নিজের কর্মস্থানে ফিরে যান।
গাড়িতে থাকলে গাড়ি থামিয়ে দিনঃ
আপনি যদি গাড়িতে থাকেন তাহলে ফ্লাই ওভার, ব্রিজ বড় কোন গাছ বৈদ্যুতিক
খুঁটি থেকে সবসময় গাড়ি দূরে নিয়ে গিয়ে থামিয়ে রাখুন। ভূমিকম্প চলাকালীন
অবস্থায় গাড়ির ভেতরেই থাকবেন।
লিফট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেনঃ
ভূমিকম্প চলাকালীন অবস্থায় লিফট ব্যবহার করে নামবেন না। লিফট ব্যবহার করা থেকে
বিরত থাকবেন। তাড়াহুড়া করে নামার জন্য বড় বিল্ডিং থেকে লাফ দিবেন না।
ভূমিকম্পের সময় কি কি করা উচিত নয়
বন্ধুরা আপনারা এতক্ষন ভূমিকম্প হলে করণীয় কি এই সম্পর্কে জানলেন। এগুলো জেনে
থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তাহলে বিভিন্ন রকম বিপদ হলে আপনি করণীয়গুলো মেনে চললে
বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাবেন। এই উদ্দেশ্যে আমাদের পোষ্ট টি তৈরি করা। এখন চলুন
জেনে নিন ভূমিকম্পের সময় কি কি করা উচিত নয়। এগুলো আপনার জানা থাকা
প্রয়োজন।
ভূমিকম্পের সময় কি কি করা উচিত নয়?
- ভূমিকম্পের সময় অবশ্যই বড় কোন বিল্ডিং, গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে দাঁড়াবেন না।
- ভূমিকম্পের সময় বড় বিল্ডিং থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে যাবেন না। এতে আপনার বিভিন্ন রকম ক্ষতি হতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে ঘাবড়ে যাবেন না। সাহসিকতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন।
- বড় বিল্ডিং থেকে নামার জন্য লাফ দিবেন না।
- ঘরের ভেতরে থাকলে গ্যাস সিলিন্ডার অথবা বৈদ্যুতিক লাইন এর কাছে থাকবেন না।
- যদি বড় দুর্ঘটনার ফলে কোথাও আটকে যান তাহলে বেশি নড়াচড়া করবেন না।
- কোথাও আটকে গেলে বেশি নড়াচড়া না করে সাহায্য চাওয়ার চেষ্টা করবেন এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে সময়টা মোকাবেলা করবেন।
- ভূমিকম্পের সময় অবশ্যই লিফট ব্যবহার করবেন না।
- ভূমিকম্পের সময় একটা বিল্ডিংয়ে একসাথে অনেকজন ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকবেন না।
- ভূমিকম্পের সময় গাড়িতে থাকলে গাড়ি থামিয়ে গাড়ির ভেতরে অপেক্ষা করবেন।
- ভূমিকম্প থেমে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে বিল্ডিং এর ঢুকে যাবেন না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবেন।
বাংলাদেশে ভূমিকম্পের কারণ ও উৎস
আপনি কি বাংলাদেশে ভূমিকম্পের কারণ ও উৎস সম্পর্কে জানতে চান? এখন আমরা বাংলাদেশে
ভূমিকম্পের কারণ ও উৎস সম্পর্কে জানব। বিভিন্ন সময় খবরে আমরা জানতে পারি
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু এই ভূমিকম্পের মাত্রা খুবই
কম। যার কারণে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয় না। পৃথিবীর সব জায়গার
ভূমিকম্পের কারণ একই হয়ে থাকে। মাটির নিচে প্লেট গুলোর স্থান পরিবর্তনের কারণে
ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের আশেপাশের দেশগুলোতে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে এর প্রভাব বাংলাদেশও পরে। প্রাকৃতিক ভাবে বাংলাদেশে অবস্থানগত দিক থেকে কোন দুইটি প্লেটের উপরে পড়েনি তাই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ভয়াবহ ভুমিকম্পের শিকার হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু এলাকা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা নামে পরিচিত। সেগুলো হলোঃ
- সিলেট
- রাঙ্গামাটি
- কক্সবাজার
- বান্দরবান সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার হিসেবে পরিচিত।
ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন হওয়ার কারণে ভূমিকম্প হবার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।
কারণ বাংলাদেশের অবস্থান ভূমিকম্প জোনে রয়েছে। সুতরাং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে
সাথে বাংলাদেশের জনগণকে সতর্ক হতে হবে যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারা
যায়।
ভূমিকম্প হওয়ার কারণ কয়টি
ভূপৃষ্ঠের নিচে একটি শিলা যখন অন্য আরেকটি শিলার উপরে উঠে যায় তখন ভূমির যেই কম্পন সৃষ্টি হয় তাকেই ভূমিকম্প বলে। বেশ কয়েকটি কারণে ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে। ভূমিকম্প হলে করণীয় কি এর সাথে ভূমিকম্প হওয়ার কারণ কয়টি সেগুলো জেনে থাকা প্রয়োজন। তাহলে চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে ভূমিকম্প হওয়ার কারণ কয়টি তা জেনে নেই। ভূমিকম্প হওয়ার অনেকগুলোই কারণ রয়েছে তার মধ্যে প্রধান তিনটি কারণ উল্লেখ করা হলো।
ভূপৃষ্ঠ জনিত কারণে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়ঃ
আমরা অনেকেই এটা জানি যে আমাদের ভূপৃষ্ঠ অনেকগুলো প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত হয়।
একটি প্লেট অন্য আরেকটি প্লেটের উপরে অবস্থান করে। এবং একটি প্লেট অন্যটি থেকে
আলাদা থাকে। এসকল প্লেটগুলোর নিচে সকল ধরনের গলিত পদার্থ থাকে। প্রাকৃতিক কারণে
গলিত পদার্থগুলোর অবস্থান পরিবর্তন হওয়ার কারণে প্লেটগুলোর স্থান পরিবর্তন হয়
এর জন্যই ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় নারকেল তেলের ব্যবহার
আগ্নেয়গিরির কারণে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়ঃ
অনেক সময় আগ্নেয়গিরির প্রচন্ড জোরে বিস্ফোরণ হয় এর ফলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
তাই আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং গলিত লাভা কে ভূমিকম্পের অন্যতম একটি কারণ হিসেবে
ধরা হয়।
পাহাড় শিলাচ্যুতি কারণে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়ঃ
অনেক সময় পৃথিবীর বড় বড় পাহাড় এবং উঁচু স্থান থেকে বৃহৎ আকারে শিলাচ্যুতি হয় একারণে ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে। ভূমিকম্প হওয়ার অন্যতম কারণ এটি।