হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ - হাইপো থাইরয়েড কি
হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ এবং হাইপো থাইরয়েড কি তা জানতে আজকের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। বর্তমানে অনেকেই আছেন যারা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ এবং হাইপো থাইরয়েড কি। হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ এবং হাইপো থাইরয়েড কি এ বিষয়ে আমরা অনেকেই জানি না।
আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকলে হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ এবং হাইপো থাইরয়েড কি ছাড়া ও আপনি আরো জানতে পারবেন হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায়, হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়, হাইপো থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা।
পেজ কনটেন্ট সূচিপত্র: হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ - হাইপো থাইরয়েড কি
- হাইপো থাইরয়েড কি
- হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ
- হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায়। হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়
- হাইপো থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা
- শেষ কথা: হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ - হাইপো থাইরয়েড কি
হাইপো থাইরয়েড কি
হাইপো থাইরয়েড কি তা জানার আগে আমি আপনাকে জানাবো থাইরয়েড কি। থাইরয়েড সম্পর্কে আলোচনার পরে আপনাকে জানাবো হাইপো থাইরয়েড কি। চলুন তাহলে শুরুতেই জেনে নিই থাইরয়েড কি: থাইরয়েড হলো আমাদের শরীরে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্ৰন্থি। যা আমাদের গলায় অবস্থিত। থাইরয়েড গ্রন্থির থেকে থাইরয়েড হরমোন তৈরি হয় এবং শরীরে নিঃসৃত হয়।
আমাদের শরীরে বিভিন্ন বিপাক কাজে এই গ্ৰন্থি সাহায্য করে থাকে। আমাদের মাথার চুল থেকে শুরু করে পায়ের নখে পর্যন্ত এই হরমোনের ভূমিকা অপরিসীম। থাইরয়েড গ্রন্থিকে প্রজাপতি বলা হয়। কারণ এটি দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো। প্রজাপতির যেমন ২ পাশে ২ টি পাখনা থাকে ঠিক তেমনি এই গ্রন্থির ও ২ পাশে ২ টি লোব থাকে। একটি হলো ডান লোব অপরটি হলো বাম লোব।
আর এই ডান লোব ও বাম লোবের মাঝখানে একটা সংযোগ থাকে যেটা ২ লোবের সংযোগ হিসেবে কাজ করে। এই গুরুত্বপূর্ণ গ্ৰন্থিটিতে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। যথা: হাইপোথাইরয়েডিজম, হাইপার থাইরয়ডিজম, গয়েটার বা গলগন্ড, নডিউল, থাইরয়েড ক্যান্সার। হাইপো থাইরয়েড থাইরয়েড গ্রন্থির একটি রোগ। এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব হাইপো থাইরয়েড কি। চলুন তাহলে দেখে নেই হাইপো থাইরয়েড কি।
হাইপো থাইরয়েড কি: হাইপো থাইরয়েড এর অনেকেই ভুগে থাকেন কিন্তু তারা জানেন ই না যে হাইপো থাইরয়েড কি। থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্রম যখন কমে যায় তখন তাকে হাইপো থাইরয়েড বলে। হাইপো থাইরয়েড কে হাইপোথাইরয়েডিজম ও বলে। থাইরয়েড গ্রন্থিতে ২ ধরনের সেল থাকে। একটি হলো ফলিকুলার সেল এবং অপরটি হলো প্যারা ফলিকুলার সেল। ফলিকুলার সেল থেকে ২ ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়। একটি হলো টি থ্রি এবং অপরটি হলো টি ফোর।
টি থ্রি হলো ট্রাই আয়োডোথাইরোনিন এবং টি ফোর হলো থাইরক্সিন। আর প্যারা ফলিকুলার সেল থেকে ক্যালসোটোনিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয়।টি থ্রি এবং টি ফোর যখন কমে যায় তখন তাকে আমরা হাইপো থাইরয়েড বা হাইপোথাইরয়েডিজম বলি। আর এই দুটি যখন বেড়ে যায় তখন তাকে আমরা হাইপার থাইরয়ডিজম বলি।
হাইপো থাইরয়েড কি আশাকরি তা বুঝতে পেরেছেন। হাইপো থাইরয়েড কি তা আপনাকে খুব সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায়, হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়, হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ।
হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ
হাইপো থাইরয়েড এর আক্রান্ত রোগীদের শরীরে হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ দেখা যায়। হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ কি না তা কিভাবে বুঝবেন তা আমি এখন বলবো। হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ গুলো জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনি হাইপো থাইরয়েড এর ভুগছেন কি না। আপনার শরীরের হাইপো থাইরয়েড আছে কিনা তা হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ গুলোর সাথে মিলিয়ে নিলেই বুঝতে পারলাম। চলুন তাহলে দেখে নেই হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ গুলো কী। হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ:
- রোগীর ওজন বৃদ্ধি পাওয়া বা মোটা হওয়া
- অকারণে রোগীর ক্লান্তি অনুভব করা
- মহিলাদের পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়া
- মহিলাদের গর্ভধারণে সমস্যা হওয়া
- অনেক সময় রোগীর হাত বা পা এর চামড়া খসখসে হয়ে যেতে পারে
আরো পড়ুন: উমরি কাজা নামাজের নিয়ত - উমরি কাজা নামাজের দলিল
মহিলাদের এই হাইপো থাইরয়েড থাকলে তাদের বাচ্চা কনসিভ করে না। আর যদিও বা করে তাহলে বাচ্চা ক্রিটিনিজম হিসেবে জন্ম গ্ৰহণ করে। বাচ্চা মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় এই হরমোন টা পায় না। ক্রিটিনিজম হলো এক ধরনের মানসিক রোগ। যার ফলে বাচ্চার স্বাভাবিক মানসিক বিকাশ ঘটে না। পরবর্তীতে আমরা আরো জানতে পারবো হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় এবং হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় গুলো কী।
হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায়। হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়
হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ গুলো রোগীর শরীরে প্রকাশ পেলে ডাক্তাররা হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় এবং হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় গুলো দিয়ে থাকেন। আপনি কি হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় গুলো জানতে চান। চলুন তাহলে দেখে নেই হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় গুলো কী। হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেলে ডাক্তাররা শুরুতেই নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু টেস্ট দিয়ে থাকেন। এগুলো হলো: T3, T4 এবং Tsh। এগুলো তেমন কোনো জটিল বা কঠিন পরীক্ষা নয়। এগুলো সব ই রক্তের পরীক্ষা।
হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় খুব বেশি একটা কঠিন নয়। তবে হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় হিসেবে ডাক্তাররা যে ডোজ দিয়ে থাকেন তা খুব ই অল্প কিন্তু সারাজীবনের। এটি খুব বেশি একটা জটিল নয়। হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় হিসেবে ডাক্তারারা যে ঔষধ দিয়ে থাকেন তা দিয়ে আপনি আপনার হাইপো থাইরয়েড কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আর যদি এটি অবহেলা করেন। তাহলে অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় জটিলতা গুলো দেখা দিতে পারে। আপনি যতো জলদি এর ঔষধ নিবেন তত জলদি আপনার হাইপো থাইরয়েড কে নিয়ন্ত্রনে আনতে পারবেন।
হাইপো থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা
সামান্য সচেতনতা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করাই হতে পারে হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় বা হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায়। চলুন তাহলে দেখে নেই হাইপো থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা গুলো কি। হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় এর জন্য হাইপো থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা হতে হবে খুব ই পুষ্টিকর কিন্তু কম ক্যালরি যুক্ত। আয়োডিন, জিংক এবং কপার রয়েছে এমন খাদ্য গুলো বেশি পরিমাণে খেতে হবে।
হাইপো থাইরয়েড কি সেখানেই আমি বলেছিলাম হাইপো থাইরয়েড হয়ে থাকে আয়োডিনের অভাবে। হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় হিসেবে হাইপো থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকায় আয়োডিন জাতীয় খাবার গুলো খেতে হবে। এই খাবার গুলো ই হতে পারে আপনার হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়।
হাইপো থাইরয়েড থেকে গলগন্ড বা গয়েটার হতে পারে। কারণ এসব রোগীদের শরীরে প্রয়োজনীয় আয়োডিন তৈরি হয় না। এজন্য রোগীকে নিজের ই আয়োডিন জাতীয় খাবার গুলো বেশি পরিমাণে খেতে হবে। খাদ্যে আয়োডিন যুক্ত লবন ব্যবহার করতে পারেন। যা হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও শিম, ছোলার ডাল, কাজুবাদাম, সামুদ্রিক মাছ, ছোট মাছ, রুই, কাতলা, চিংড়ি হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় হিসেবে ভালো কাজ করবে।
ফল ও শাক-সবজি পরিমাণ মতো খেতে পারবে। তবে হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় গুলোর মধ্যে কিছু ফল ও শাক-সবজি বাদ দিতে হবে। দুধ ও নারকেল এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি সঠিক মাত্রায় হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে। টক দই শরীরে হরমোনের বাড়া কমানো নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। টক দই হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মুরগির মাংসে রয়েছে জিংক যা হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে অন্যতম। এছাড়াও হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায় হিসেবে খাসির মাংস খেতে পারেন।
শেষ কথা: হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ - হাইপো থাইরয়েড কি
আশাকরি পোস্টটি পড়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ এবং হাইপো থাইরয়েড কি। এছাড়াও এই পোস্টে আমি আপনাকে আরো বলেছি হাইপো থাইরয়েড কমানোর উপায়, হাইপো থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়, হাইপো থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা। পোস্টটি ভালো লাগলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ফলে তারাও এই হাইপো থাইরয়েড এর লক্ষণ এবং হাইপো থাইরয়েড কি সে ব্যাপারে জানতে পারবেন।
এরকম আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট পড়তে দৈনিক আমাদের অর্ডিনারি আইটি ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকে এই পর্যন্তই। ২২০৭০