চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা - চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা

আম, আপেল, পেয়ারার মত চেরি ও আমাদের শরীরের জন্য অত্যান্ত উপকারী একটি ফল। চেরি ফল মূলত সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য চাষ করা হয় কিন্তু এই ফলের চাহিদা এখন বেশী হওয়ায় বানিজ্যিকভাবে এই ফল চাষ করা হয়। আজ আমরা আমাদের এই পোস্টে চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার নিয়ম, চেরি ফল চেনার উপায়, চেরি ফল কোথায় পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।
চলুন আর দেরি না করে চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার নিয়ম, চেরি ফল চেনার উপায়, চেরি ফল কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্রঃ চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা - চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা

চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

চেরি ফলের অনেক ধরনের উপকারিতা আছে যা আমরা আজ আমাদের এই নিবন্ধটিতে আলোচনা করব। চলুন দেরি না করে চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
  • চেরি ফলে আছে ভিটামিন 'সি' যা আমাদের শরীরের কোথাও কেটে গেলে সেই ক্ষত পূরণ করার ভূমিকা পালন করে।
  • ডায়বেটিস রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে চেরি।
  • যাদের কোষ্ঠ্যকাঠিন্য আছে তাদের জন্য চেরি খুবই উপকারী। কারণ চেরিতে আছে উচ্চ ফাইবার।
  • চেরি ফল কোষের ক্ষয় রোধ করে ও বলিরেখা প্রতিরোধ করে। চেরি ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে ও মেয়েদের তরুনী করে রাখে বুড়িয়ে যেতে দেয় না।
  • চেরিতে প্রায় ১৭৫ গ্রাম পটাসিয়াম আছে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও যাদের উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যা আছে তারা নিয়মিত চেরি খান।
  • হার্টের রোগীদের জন্য চেরি ফল অত্যান্ত উপকারী কারণ চেরি দেহে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে।
  • চেরি ফল ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। কারণ নিয়মিত চেরি খেলে দেহে যেই মরা সেল বা কোষ থাকে তা শক্তিতে পরিনত হয়।
  • চেরি ফল শরীরে চর্বি জমতে বাঁধা প্রদান করে। আর চর্বি জমলে শরীরে ওজন বাড়ে। তাই নিয়মিত চেরি খেতে হবে যাতে পেটে চর্বি না জমে।
  • চেরিতে থাকা ভিটামিন চুলের পুষ্টি জোগায়। তাই চেরি শুধু পাচনতন্ত্র বা ত্বকের জন্যই নয় চেরি চুলের জন্যও খুবই উপকারী।
  • চেরিতে মেলাটোনিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে যা আমাদের ঘুমের ধরনকে নিয়ন্ত্রন করে। তাই চেরি আমাদেরকে অনিদ্রা থেকে মুক্তি দেয়।

চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা | চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

চেরির যেমন উপকারিতা আছে তেমনি উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা ও বিদ্যমান। নিচে চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বলা হল।
  • ১ কাপ চেরিতে ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে মানে চেরিতে ফাইবারের উপস্থিতি বেশী। কিন্তু আপনি যদি অল্প পরিমানে চেরি খান তাহলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আর যদি উচ্চ ফাইবারের অংশ হিসেবে আপনি চেরি খান তাহলে আপনার গ্যাস, পেটে খিঁচুনি বা ফোলাভাব হতে পারে বিশেষ করে যদি আপনি খুবই অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত ফাইবার গ্রহনের পরিমান বাড়ান।
  • চেরি পুষ্টিগুনে ভরপুর কিন্তু আপনি যদি বেশী পরিমানে অন্যান্য পেয়োজনীয় পুষ্টির বদলে চেরি খান তাহলে আপনার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
  • যাদের শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের জন্য চেরি বিপজ্জনক হতে পারে। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অ্যালার্জি অ্যাজমা অ্যান্ড ইমিউনোলজি বলেন, চেরিতে যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের গলা বন্ধ, শ্বাসকষ্ট ও আমবাত হতে পারে। যদি এই সমস্যাগুলোর মধ্যে যেকোন একটিও হয় তাহলে তাকে চেরি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

চেরি ফল কোথায় পাওয়া যায়? | চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

চেরি একটি বিদেশী ফল। বাংলাদেশের মাটিতে এই ফলের চাষ করা হয়না বললেই চলে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের কাপ্তাই, চুয়াডাঙ্গা প্রভৃতি স্থানে চেরি ফল চাষ করা হচ্ছে। চেরি "প্রুনাস" গনের অন্তর্ভূক্ত এক ধরনের ফল। 
চেরি ফল অনেক জাতের হয়ে থাকে তার মধ্যে দুইটি প্রজাতি আমেরিকাতে ও তিনটি প্রজাতি ইউরোপে ও অন্যগুলো এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় হয়।  prunus avium প্রজাতির চেরি মিষ্টি চেরি বা (বুনো চেরি) নামে পরিচিত যেটা মানুষ খেয়ে থাকে ৷ আর Prunus cerasus প্রজাতির চেরি টক চেরি নামে পরিচিত ৷ prunus avium এবং prunus cerasus হল চেরির চাষযোগ্য জাত।

চেরি ফল চেনার উপায় | চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

চেরি একটি ছোট লাল টমেটোর মত দেখতে। একটি চেরি ফলের ওজন প্রায় ৫ থেকে ৬ গ্রাম হবে। আসল চেরি খেতে টক ও হালকা মিষ্টি। দেখতে খুবই সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু। বর্তমানে বাজারে চেরি নামে যেই ফলটি বিক্রি করা হচ্ছে তা আসলে চেরি না। করমচা কে লাল রঙে ডূবিয়ে সেদ্ধ করে চিনির সিরায় ডুবিয়ে তাকে চেরি বলে বিক্রি করা হচ্ছে। যা খেলে আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই দেখে শুনে আসল চেরি ক্রয় করুন। নকল চেরি কেনা থেকে বিরত থাকুন। 

চেরি ফল খাওয়ার নিয়ম | চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

সব ধরনের ফলের মতই চেরি ফল খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে। আমরা সকলেই জানি সব সময় ফল খাওয়া উচিত নয়। ফল খাওয়ারও কিছু নিয়ম আছে। চেরি ফল সকালে খালি পেটে খাওয়া যেতে পারে। আবার আপনি যদি চান তাহলে আপনার খাবারের যেকোন সময় চেরি ফল খেতে পারেন, এতে আপনার সেই সময়ের খাবারের চাহিদা ও কমবে ও শরীরে পুষ্টি ও পাবেন।
কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে প্রয়োজনের চেয়ে বেশী যেন চেরি খাওয়া না হয়। কারণ চেরিতে ফাইবারের পরিমান বেশী তাই প্রয়োজনের চেয়ে বেশী চেরি খেলে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই অতিরিক্ত চেরি খাওয়ার ব্যপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

শেষ কথাঃ চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা - চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা

বন্ধুরা, আজ আমরা চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা - চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা নিয়ে একটি নিবন্ধ তৈরি করেছি। আমাদের এই পোস্টে চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার নিয়ম, চেরি ফল চেনার উপায়, চেরি ফল কোথায় পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি, আমাদের এই চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা, চেরি ফল খাওয়ার নিয়ম, চেরি ফল চেনার উপায়, চেরি ফল কোথায় পাওয়া যায় পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা উপকৃত হবেন। এই ধরনের আরও সুন্দর সুন্দর নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন, ধন্যবাদ। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url