গ্রাম নিয়ে কবিতা - পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা - গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা

কবিতা পড়তে কে না ভালোবাসে। অনেকে আবার কবিতা আবৃতি করতে খুব ভালোবাসে। আর বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে সার্চ করে কবিতা খুঁজে বেড়ায়। তাই আজ আমরা গ্রাম নিয়ে যেমন- গ্রাম নিয়ে কবিতা, পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা, গ্রাম নিয়ে কবিতা জীবনানন্দ, গ্রাম নিয়ে কবিতা রবীন্দ্রনাথ, গ্রামের মেয়ে নিয়ে কবিতা, গ্রামের নদী কবিতা, গ্রামের সৌন্দর্য নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে ছড়া সকল কবিতা আমাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করব। 
গ্রাম নিয়ে কবিতা, পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা, গ্রাম নিয়ে কবিতা জীবনানন্দ, গ্রাম নিয়ে কবিতা রবীন্দ্রনাথ, গ্রামের মেয়ে নিয়ে কবিতা, গ্রামের নদী কবিতা, গ্রামের সৌন্দর্য নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে ছড়া পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

পেজ সূচিপত্রঃ গ্রাম নিয়ে কবিতা - পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা - গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা

গ্রাম নিয়ে কবিতা জীবনানন্দ দাশ

কবি জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশাল, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত বর্তমান বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙ্গালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক ছিলেন। কবি জীবনানন্দ ছিলেন বাংলা কাব্য আধিনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম। কবি জীবনানন্দ দাশ তার সকল কবিতায় গ্রাম বাংলার কথা ও নিসর্গ রূপকথা- পুরাণের জগৎ উল্লেখ করেছেন তাই তাকে "রূপসী বাংলার কবি" বলে অখ্যায়িত করা হয়েছে। 

এছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশকে বুদ্ধদেব বসু 'নির্জনতম কবি', অন্নদাশঙ্কর রায় 'শুদ্ধতম কবি' বলে আখ্যায়িত করেছেন। কবি জীবনানন্দ দাশ তার বনলতা সেন কাব্যগ্রন্থে ১৯৫৩ সালের নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলন পুরুষ্কার পায় এবং ১৯৫৫ সালে এটি ভারত সরকার সাহিত্য আকাদেমি পুরুষ্কার পায়। কবি জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতার মধ্যে আছে  বনলতা সেন, রূপসী বাংলা, বেলা অবেলা কালবেলা, মহাপৃথিবী শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি। কবি জীবনানন্দ দাশ ১৯৫৪ সালের ২২ শে অক্টোবর মৃত্যু বরণ করেন।

রূপসী বাংলা

জীবনানন্দ দাশ

আবার আসিব ফিরে

আবার আসিব ফিরে ধানসিড়ির তীরে — এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয় — হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে;
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঠাঁলছায়ায়;
হয়তো বা হাঁস হব — কিশোরীর — ঘুঙুর রহিবে লাল পায়,
সারা দিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধ ভরা জলে ভেসে-ভেসে;
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে
জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার এ সবুজ করুণ ডাঙায়;

হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে;
হয়তো শুনিবে এক লক্ষ্মীপেচাঁ ডাকিতেছে শিমুলের ডালে;
হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে;
রূপসা ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক শাদা ছেঁড়া পালে
ডিঙা রায় — রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে
দেখিবে ধবল বক: আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে –
===================

এই পৃথিবীতে এক

এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে – সবচেয়ে সুন্দর করুণ :
সেখানে সবুজ ডাঙা ভ’রে আছে মধুকূপী ঘাসে অবিরল;
সেখানে গাছের নাম : কাঁঠাল, অশ্বত্থ, বট, জারুল, হিজল;
সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ;
সেখানে বারুণী থাকে গঙ্গাপসাগরের বুকে, - সেখানে বরুণ
কর্ণফুলী ধলেশ্বরী পদ্মা জলাঙ্গীরে দেয় অবিরল জল;
সেইখানে শঙ্খচিল পানের বনের মতো হাওয়ায় চঞ্চল,
সেইখানে লক্ষ্ণীপেঁচা ধানের গন্ধের মতো অস্ফুট, তরুণ;

সেখানে লেবুর শাখা নুয়ে থাকে অন্ধকারে ঘাসের উপর;
সুদর্শন উড়ে যায় ঘরে তার অন্ধকার সন্ধ্যার বাতাসে;
সেখানে হলুদ শাড়ি লেগে থাকে রূপসীর শরীরের ’পর –
শঙ্খমালা নাম তার : এ- বিশাল পৃথিবীর কোনো নদী ঘাসে
তারে আর খুঁজে তুমি পাবে নাকো বিশালাক্ষী দিয়েছিল বর,
তাই সে জন্মেছে নীল বাংলার ঘাস আর ধানের ভিতর।
===================

একদিন কুয়াশার এই মাঠে

একদিন কুয়াশার এই মাঠে আমারে পাবে না কেউ খুঁজে আর, জানি;
হৃদয়ের পথ চলা শেষ হল সেই দিন — গিয়েছে যে শান — হিম ঘরে,
অথবা সান্ত্বনা পেতে দেরি হবে কিছু কাল — পৃথিবীর এই মাঠখানি
ভুলিতে বিলম্ব হবে কিছু দিন, এ মাঠের কয়েকটি শালিকের তরে

আশ্চর্য আর বিস্ময়ে আমি চেয়ে রবো কিছু কাল অন্ধকার বিছানার কোলে,
আর সে সোনালি চিল ডানা মেলে দূর থেকে আজো কি মাঠের কুয়াশায়
ভেসে আসে? সেই ন্যাড়া অম্বনে’র পানে আজো চলে যায় সন্ধ্যা সোনার মতো হলে
ধানের নরম শিষে মেঠো ইঁদুরের চোখ নক্ষত্রের দিকে আজো চায়?

সন্ধ্যা হলে? মউমাছি চাক আজো বাঁধে নাকি জামের নিবিড় ঘন ডালে,
মউ খাওয়া হয়ে গেলে আজো তারা উড়ে যায় কুয়াশায় সন্ধ্যার বাতাসে –
কতো দূরে যায়, আহা… অথবা হয়তো কেউ চালতার ঝরাপাতা জ্বালে
মধুর চাকের নিচে — মাছিগুলো উড়ে যায়… ঝ’রে পড়ে… ম’রে থাকে ঘাসে –
===================

তোমরা যেখানে সাধ চলে যাও

তোমরা যেখানে সাধ চলে যাও — আমি এই বাংলার পারে
র’য়ে যাব; দেখিব কাঁঠালপাতা ঝরিতেছে ভোরের বাতাসে;
দেখিব খয়েরি ডানা শালিখের সন্ধ্যায় হিম হয়ে আসে
ধবল রোমের নিচে তাহার হলুদ ঠ্যাং ঘাসে অন্ধকারে
নেচে চলে-একবার — দুইবার — তারপর হঠাৎ তাহারে
বনের হিজল গাছ ডাক দিয়ে নিয়ে হৃদয়ের পাশে;
দেখিব মেয়েলি হাত সকরুণ — শাদা শাঁখা ধূসর বাতাসে
শঙ্খের মতো কাঁদে: সন্ধ্যায় দাঁড়ালে সে পুকুরের ধারে,

খইরঙা হাঁসটিরে নিয়ে যাবে যেন কোন্‌ কাহিনীর দেশে –
‘পরণ-কথা’র গন্ধ লেগে আছে যেন তার নরম শরীরে,
কল্‌মীদামের থেকে জন্মেছে সে যেন এই পুকুরের নীরে –
নীরবে পা ধোয় জলে একবার — তারপর দূরে নিরুদ্দেশে
চ’লে যায় কুয়াশায় — তবু জানি কোনোদিন পৃথিবীর ভিড়ে
হারাব না তারে আমি — সে যে আছে আমার এ বাংলার তীরে।
===================

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যাই না আর : অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে
ভোরের দোয়েলপাখি — চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম — বট — কাঠালের — হিজলের — অশখের করে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল — বট — তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ

দেখেছিল; বেহুলার একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে –
কৃষ্ণা দ্বাদশীর জোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চরায় –
সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বত্থ বট দেখেছিল, হায়,
শ্যামার নরম গান শুনেছিলো — একদিন অমরায় গিয়ে
ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিলো ইন্দ্রের সভায়
বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিলো পায়।
===================

তোমার বুকের থেকে একদিন চলে যাবে

তোমার বুকের থেকে একদিন চলে যাবে তোমার সন্তান
বাংলার বুক ছেড়ে চলে যাবে; যে ইঙ্গিতে নক্ষত্রও ঝরে,
আকাশের নীলাভ নরম বুক ছেড়ে দিয়ে হিমের ভিতরে
ডুবে যায়, – কুয়াশায় ঝ’রে পড়ে দিকে-দিকে রপশালী ধান
একদিন; – হয়তো বা নিমপেঁচা অন্ধকারে গা’বে তার গান,
আমারে কুড়ায়ে নেবে মেঠো ইঁদুরের মতো মরণের ঘরে –
হ্নদয়ে ক্ষদের গন্ধ লেগে আছে আকাঙ্খার তবু ও তো চোখের উপরে
নীল, মৃত্যু উজাগর – বাঁকা চাঁদ, শূন্য মাঠ, শিশিরের ঘ্রাণ -

কখন মরণ আসে কে বা জানে – কালীদহে কখন যে ঝড়
কমলের নাম ভাঙে – ছিঁড়ে ফেলে গাংচিল শালিকের প্রাণ
জানি নাকো;- তবু যেন মরি আমি এই মাঠ – ঘাটের ভিতর,
কৃষ্ণা যমুনায় নয় – যেন এই গাঙুড়ের ডেউয়ের আঘ্রাণ
লেগে থাকে চোখে মুখে – রুপসী বাংলা যেন বুকের উপর
জেগে থাকে; তারি নিচে শুয়ে থাকি যেন আমি অর্ধনারীশ্বর।
===================

গ্রাম নিয়ে কবিতা রবীন্দ্রনাথ

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি জন্ম গ্রহণ করেন। তার ছদ্মনাম ছিল ভানুসিংহ ঠাকুর। তিনি ছিলেন একাধারে অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে তার বিখ্যাত 'গীতাঞ্জলী' কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পুরুষ্কার লাভ করেন। এছাড়াও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ কবিগুরু, গুরুদেব ও বিশ্বকবি বলে অভিহিত করা হয়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট মৃত্যু বরণ করেন।
আমাদের ছোট নদী
---সংকলিত (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে 
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। 
পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি, 
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি। 

চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা, 
একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা। 
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক, 
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক। 

আর-পারে আমবন তালবন চলে, 
গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে। 
তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাইবার কালে 
গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে। 

সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে 
আঁচল ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে। 
বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে, 
বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে। 

আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর 
মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর। 
মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে, 
ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে। 
দুই কূলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া, 
বরষার উৎসবে জেগে ওঠে পাড়া।।

বিপদে মোরে রক্ষা করো
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিপদে মোরে রক্ষা করো
এ নহে মোর প্রার্থনা,
বিপদে আমি না যেন করি ভয়।
দুঃখতাপে ব্যথিত চিতে
নাই বা দিলে সান্ত্বনা,
দুঃখে যেন করিতে পারি জয়।
সহায় মোর না যদি জুটে
নিজের বল না যেন টুটে,
সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি
লভিলে শুধু বঞ্চনা
নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয়।

আমারে তুমি করিবে ত্রাণ
এ নহে মোর প্রার্থনা,
তরিতে পারি শকতি যেন রয়।
আমার ভার লাঘব করি
নাই বা দিলে সান্ত্বনা,
বহিতে পারি এমনি যেন হয়।
নম্রশিরে সুখের দিনে
তোমারি মুখ লইব চিনে,
দুখের রাতে নিখিল ধরা
যেদিন করে বঞ্চনা
তোমারে যেন না করি সংশয়।

আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়
         লুকোচুরির খেলা।
      নীল আকাশে কে ভাসালে
         সাদা মেঘের ভেলা।
            আজ ভ্রমর ভোলে মধু খেতে,
                  উড়ে বেড়ায় আলোয় মেতে,
            আজ কিসের তরে নদীর চরে
                     চখাচখির মেলা।

ওরে যাবো না আজ ঘরে রে ভাই,
         যাবো না আজ ঘরে!
ওরে আকাশ ভেঙে বাহিরকে আজ
         নেব রে লুঠ করে।
            যেন জোয়ার জলে ফেনার রাশি
                  বাতাসে আজ ফুটেছে হাসি,
            আজ বিনা কাজে বাজিয়ে বাঁশি
                  কাটবে সারা বেলা।

গ্রামের মেয়ে নিয়ে কবিতা

গ্রাম বাংলার রুপসী মেয়ে
__কাইয়ুম আকন্দ__

তুমি গ্রীষ্মের উদাস দুপুর বেলায়,
বাতাসে মন ভাসিয়ে গাছের তলায়,
বসে থাকা সেই মেয়েটি,
যাকে আমি ভালবেসেছি।
তুমি বর্ষার রিমঝিম বৃষ্টির,
ছন্দ তোলা সুর,
যে সুরের মায়ায়,
মন হয়েছে বিধুর
হে রুপসি,
তোমাকে আমি ভালবেসেছি।
তুমি শরৎ এর দিনে,
মেঘ বিহীন শূন্য আকাশের নিচে,
আনমনে'
তেতুল তলায়, ছোট্ট পাথর হাতে নিয়ে,
এক্কাদোক্কায় মেতে থাকা সেই
মেয়েটি,
যাকে আমি ভালবেসেছি।
তুমি হেমন্তের খোলা আকাশের নিচে,
সবুজ ক্ষেতের মাঝে,
ছাগল ছানা নিয়ে মেতে থাকা,
গ্রাম বাংলার সেই রুপসী,
যার প্রতিটি চরণে ছন্দ
মুখে অনাবিল হাসি;
তাই তোমাকে আমি ভালবেসেছি।
তুমি শীতের হিমেল হাওয়ায়,
চুল এলিয়ে মিঠেল রোদে,
চুপটি করে বসে থাকা সেই মেয়েটি,
যেথায় দেখে প্রথম আমি,
তোমায় ভালবেসেছি।
তুমি বসন্তের ফুল বাগানে,
লুকিয়ে ফুল তোলা সেই মেয়েটি,
যার গানের সুরে কোকিল গাইত গান,
কবিতার চরণ বুনত কবি;
এত সব শোভা, রুপ লাবণ্য,
আমি তোমার মাঝে খুঁজে পেয়েছি,
তাই তো আমি তোমাকে ভালবেসেছি।

গ্রামের নদী কবিতা | গ্রামের সৌন্দর্য নিয়ে কবিতা

নদীর ধারে আমাদের গ্রাম
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

অজয়ের ধারে সবুজের ছায়ে আছে ছোট এক গ্রাম,
মাঝখানে তার আছে দিঘি এক তালদিঘি তার নাম।
তালদিঘির পাড়েতে তার তাল-সুপারির গাছে গাছে,
বাবুইপাখি উড়ে আসে সেথা বাসা বাঁধে আর নাচে।

গ্রামসীমানায় পথের দুধারে হেরি সবুজ গাছের সারি,
রাঙাপথ ধরে লাল ধূলো উড়ে ছুটে চলে গরুর গাড়ি।
পথের দুধারে বট-অশ্বত্থগাছ, আছে কাঞ্চনতলার মাঠ,
আর কিছু দূরে সোজপথ ধরে দেখি অজয়নদীর ঘাট।

অজয় নদীর ঘাটের কাছে বন-শালিকেরা করে খেলা,
গাঁয়ের বধূরা জল নিয়ে যায় পড়ে আসে যবে বেলা।
সোনার আলোয় ভরে নদীচর সোনালী সূর্য বসে পাটে,
সোনালী কিরণ ছড়িয়ে পড়ে হেথা অজয় নদীর ঘাটে।

দূরের গ্রামে জ্বলে ওঠে দীপ বাজে দূরে সাঁঝের সানাই,
অজয়নদীর ঘাটে চাঁদতারা হাসে ফুটফুটে ঐ জোছনায়।
অজয় নদীর ধারে আমাদের গ্রাম, পাথরচুড় তার নাম,
গাঁ যে আমার, মাটি আমার, সে আমার সুখের স্বর্গধাম।

নদীর পাড়ে ছোট্ট গাঁ
বেলাল হোসেন 

নদীর পাড়ে ছোট্ট গাঁ ঐতো মোদের গ্রাম, 
                     ছোট বড় সবাই মিলে আমরা থাকি তাম।
 আমাদের ছোট্ট গ্রাম চর গয়টা পাড়া,
                          পাশ দিয়ে ছোট্ট নদী বইছে শুধু ধারা।
 চৈত্র মাসে সেইনা নদী জাগে বালুর চর,
                কত কিশোর হাওয়ুস করে বানায় বালুর ঘর।
সন্ধা বেলা সবাই মিলে আসে ঘরে ফিরে,
                       রাত দুপুরে শিয়াল ডাকে ঐ না বহু দূরে।
সকাল বেলা সবাই মিলে কাজ করতে যায় মাঠে,
             বিকেল বেলা কেওবা যায় বাজার কিংবা হাটে।
কেওবা আবার মাছ ধরতে যায় নদীর বাঁকে,
            মাছের আশায় কৃষান বধু পথপানে চেয়ে থাকে।
ঘুরে বেড়াই নদীর ধারে কতযে আরাম,
                     নদীর পাড়ে ছোট্ট গাঁ ঐতো মোদের গ্রাম।

শেষ কথাঃ গ্রাম নিয়ে কবিতা - পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা - গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা

বন্ধুরা, আজ আমরা গ্রাম নিয়ে কবিতা - পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা - গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা নিয়ে একটি নিবন্ধ তৈরি করেছি। আমাদের এই পোস্টে গ্রাম নিয়ে কবিতা, পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা, গ্রাম নিয়ে কবিতা জীবনানন্দ, গ্রাম নিয়ে কবিতা রবীন্দ্রনাথ, গ্রামের মেয়ে নিয়ে কবিতা, গ্রামের নদী কবিতা, গ্রামের সৌন্দর্য নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে ছড়া নিয়ে আলোচনা করেছি। 

আশাকরি, আমাদের এই গ্রাম নিয়ে কবিতা, পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে বিখ্যাত কবিতা, গ্রাম নিয়ে কবিতা জীবনানন্দ, গ্রাম নিয়ে কবিতা রবীন্দ্রনাথ, গ্রামের মেয়ে নিয়ে কবিতা, গ্রামের নদী কবিতা, গ্রামের সৌন্দর্য নিয়ে কবিতা, গ্রাম নিয়ে ছড়া পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা উপকৃত হবেন। এই ধরনের আরও পোস্ট পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন, ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url