পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক - পুদিনা পাতার ব্যবহার
চলুন আর দেরি না করে পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক, পুদিনা পাতার ব্যবহার, পুদিনা পাতার কার্যকারিতা, পুদিনা পাতার কাজ, পুদিনা পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।
পেজ সূচিপত্রঃ পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক - পুদিনা পাতার ব্যবহার
- পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক
- পুদিনা পাতার ব্যবহার
- পুদিনা পাতার কার্যকারিতা | পুদিনা পাতার কাজ
- পুদিনা পাতা চেনার উপায়
- শেষ কথাঃ পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক - পুদিনা পাতার ব্যবহার
পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক
সব কিছুরই উপকারী দিক ও ক্ষতিকর দিক আছে। তাম্নি পুদিনা পাতারও কিছু ক্ষতিকর দিক আছে। নিচে পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে দেওয়া হল-
আপনি যদি গর্ভবতী হন তাহলে, আপনার পুদিনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় পুদিনা পাতা সেটা কাঁচা বা শুকনা হোক না কেন, চা খেলে গর্ভাবস্থার সমস্যা হতে পারে। এমনকি বেশী পরিমানে পুদিনা পাতার রস বা পুদিনা পাতা খেলে গর্ভপাত পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু যেসব মহিলারা পুদিনা পাতা সয্য করতে পারে তাদের জন্য খুবই অল্প পরিমানে পুদিনা পাতা খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের পুদিনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
পুদিনা পাতা শিশুদের জন্য খুবই মারাত্নক। পুদিনা পাতার তেম শুশুর মুখে মালিশ করলে শিশুর শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কাঁচা পুদিনা পাতা ছোট শিশুদের জন্য খুবই মারাত্নক।
আপনি যদি অ্যাসিড রিফ্লাক্সে ভোগেন তাহলে পুদিনা পাতা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পুদিন পাতা একদিকে বদহজমে উপকার করে ও অন্যদিনে অ্যাসিডে ক্ষতি করে। পুদিনা পাতা আপনার শরীরকে বেশী পরিমানে পিত্ত তৈরির প্ররোচনা দেয় অন্যদিকে খাদ্যনালীর ভাল্ভের ক্ষতি করে। যার ফলে বেশী পরিমান পিত্ত আপনার পাকস্থলী ছেড়ে খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে এবং আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।
পুদিনা পাতার ব্যবহার | পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক
এই সুন্ধর সুগন্ধযুক্ত পুদিনা পাতাটি প্রায় অনেক কাজে ব্যবহার করা হয়। আজ আমরা পুদিনা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। চলুন পুদিনা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেই।
- পুদিনা পাতা কৃমির জন্য উপকারী। খালি পেটে লবণ ও মধু মিশিয়ে পুদিনা পাতা বেটে খান এতে কৃমি সেরে যাবে।
- মুর্চ্ছা যাওয়া রোগীকে পুদিনা পাতা কচলে শুকালে এই রোগ সেরে যায়।
- পুদিনা পাতা সর্দিজ্বর, কফ ও কুষ্ঠ রোগের জন্য অত্যান্ত্ উপকারী।
- পুদিনা পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরের জমে থাকা ক্লেদ ঘা হয়ে বেরিয়ে যায়।
- শরীরে দাদ হলে তার উপরে পুদিনা পাতা রস বার বার লাগান দাদ সেরে যাবে।
- সর্দি হলে নাকের ভিতরে ১-২ ফোঁটা পুদিনা পাতার রস দিন। সর্দি সেরে যাবে।
- দাঁতের মাড়ি শক্ত করতে পুদিনা পাতা পুড়িয়ে তার ছাই দিয়ে দাঁত মাজুন।
- বিছা পোকা কামড়ালে পুদিনা পাতা চিবিয়ে সেটা বিছা কামড়ানোর জায়গায় লাগান কষ্ট ও ব্যথা দূর হবে।
- পায়ে গোদ হলে পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে বেটে মধুর সাথে মিশিয়ে খান।
পুদিনা পাতার কার্যকারিতা | পুদিনা পাতার কাজ | পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক
নিয়মিত পুদিনা পাতা খাওয়ার বেশ কিছু কার্যকারিত আছে। যা আজ আমরা আমাদের পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। চলুন পুদিনা পাতা খাওয়ার কার্যকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই।
ত্বকের যত্নে পুদিনা পাতা- পুদিনা পাতাতে উচ্চমাত্রায় ‘স্যালিসাইলিক অ্যাসিড’ থাকে এছাড়াও পুদিনা পাতায় প্রদাহ ও ব্যাক্টেরিয়ানাশক গুন আছে যা আমাদের ত্বকের ব্রণের সমস্যা সারাতে সাহায্য করে। ত্বক পরিষ্কার করতে, মৃত কোষ দূর করতে এবং রোদে পোড়া দাগ স্বাভাবিক করতে পুদিনা পাতা খুবই কার্যকর।
আরও পড়ুনঃ বাড়ির ছাদে সুইমিং পুল
হাঁপানি কমাতে সাহায্য করে- যাদের হাঁপানির সমস্যা আছে তারা নিয়মিত পুদিনা পাতা খেতে পারেন। পুদিনা পাতা "মেন্থল" তৈরীতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ফুসফুসে আটকে যাওয়া "মিউকাস" ছড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও নাক ফুলে ওঠা সমস্যা "মেম্ব্রেন" সারিয়ে তোলে "মেন্থল" যার ফলে শ্বাস নেওয়ার কষ্ট দূর হয়। এছাড়াও নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে বুকে কফ জমতে পারে না।
হজমে সহায়তা করে- পুদিনা পাতায় প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, মেন্থল, ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে। পুদিনা পাতার এই সকল উপাদানগুলো আমাদের হজম সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করে।পুদিনা পাতা পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কমায়। এছাড়াও পুদিনা পাতাতে আছে এসেন্সিয়াল অয়েল আছে যা শক্তিশালী জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে এবং পাকস্থলী শীতল করে ও অম্লীয় খাবার সামলাতে সাহায্য করে।
মাথা ব্যাথা কমায়- পুদিনা পাতা ব্যাথা কমাতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। পুদিনা পাতা দিয়ে তৈরি অসংখ্য মলম আছে যা আমাদের মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও পুদিনা পাতার রস কপালে মাখলেও মাথা ব্যাথা দ্রুত কমে।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে- বিশেষজ্ঞরা মনে করে পুদিনা পাতা মস্তিস্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়ায়। পুদিনা পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি, উপস্থিত বুদ্ধি, সতর্কতা বাড়ে।
দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় পুদিনা পাতা- পুদিনা পাতা মুখের দূর্গন্ধ কমাতে ও দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখতে মুখের ভিতরের জীবাণু ধ্বংস করতে খুব ভালো কাজ করে।
ওজন কমাতে পুদিনা পাতা- পুদিনা পাতা শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রন ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে সাহায্য করে। কারণ আমাদের হজম ক্ষমতা এবং বর্জ্য অপসারণ করতে পুদিনা পাতা থেকে তৈরি "এসিন্সিয়াল অয়েল" খুবই ভালো কাজ করে। এছাড়াও পুদিন পাতার মাদ্ধমে খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণে আমাদের সহায়তা করে।
মৌসুমি রোগের চিকিৎসায় পুদিনা পাতা- মৌসুমি রোগ (যেমন- ঠান্ডা, সর্দিজ্বর, নাক বন্ধ ইত্যাদি) সকল সমস্যা সমাধান করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। পুদিনা পাতা কাশি কমাতে ও গলার অস্বস্তি সারাতে সাহায্য করে। এছাড়াও পুদিনা পাতা ইনহেলার, ভেপর রাব এ ব্যবহার করা হয়।
মানসিক স্বস্তি দেয়- পুদিনা পাতাতে আছে এক প্রকার কড়া সুগন্ধ যা মানসিক চাপ, হতাশা দূর করে ও শরীরকে তাজা করে তোলে। পুদিনা পাতা রক্তে 'কর্টিসল' হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আবার পুদিনা পাতার এসেন্সিয়াল অয়েলের ঘ্রানের কারণে রক্তের সেরোটনিন হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে। এই ধরনের হরমোন হতাশা ও অস্থিরতা কমায়।
পুদিনা পাতা চেনার উপায় | পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক
- পুদিনা পাতা চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হল এই পাতায় খুব তীক্ষ্ণ, মিন্টি গন্ধ থাকে।
- পুদিনা পাতা লাজুক প্রকৃতির না এবং সহজে নুইয়ে পড়ে না।
- পুদিনা বিভিন্ন কাণ্ড কাঠামো আছে। পুদিনার কাণ্ড বর্গাকার অন্য গাছের মত গোলাকার না।
- পুদিনা পাতা ছিদ্রযুক্ত প্রান্ত আছে এবং এটি ভাঙ্গার সময় মিন্টি গন্ধ বের হয়।
- পুদিনা পাতা বিভিন্ন রঙের ও ঝাপসা হয়।
- বিভিন্ন জাতের পুদিনা পাতা চেনার বিভিন্ন উপায় আছে।