থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা - থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়
এতক্ষণ আমরা থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা জানবো থানকুনি পাতা দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করা যায়। থানকুনি পাতার বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুনের পাশাপাশিও অন্য গুন আছে যেটা রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। আজ আমরা আমাদের পোস্টে থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা, থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয় ও থানকুনি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানব।
চলুন আর দেরি না করে আমরা থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা, থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়, ও থানকুনি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
পেজ সূচিপত্রঃ থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা - থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়
থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা
থানকুনি পাতা পেটে ব্যথা, জ্বর, সহ বিভিন্ন ধরনের অসুখে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও থানকুনি পাতা দিয়ে আজকাল রূপচর্চটাও করা যায়। চলুন আপনি কিভাবে থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
- থানকুনি পাতা ত্বককে সতেজ রাখতে ব্যবহার করা হয়। থানকুনিতে আছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর উচ্চমানের অ্যামাইনো অ্যাসিড যা ত্বককে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে।
- মুখে ব্রণের দাগ ও ব্রণ কমাতে সাহায্য করে থানকুনি পাতা। অতিরিক্ত সিবাম নিঃসরণ, ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ ও লোমকূপ বন্ধ হওয়ার জন্য ত্বকে ব্রণ উঠতে পারে। থানকুনির পাতায় থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান ত্বকের ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বকের ক্ষত ও জ্বালাপোড়া কমাতে থানকুনি পাতার ম্যাডেকাসসাইড খুবই উপকারী। এটি ব্যাবহারে ত্বকের তাপমাত্রা কমে ও ত্বককে ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখে।
- থানকুনি পাতায় থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন ও ফাইটোক্যামিকেল ত্বকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায় ও ত্বকের আর্দ্রতা ও কোমলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে ফলে ত্বকের থেকে বয়সের ছাপ কমে যায়।
- থানকুনি পাতাতে ফ্ল্যাভোনয়েড ও সক্রিয় উপাদান ম্যাডেকাসসাইড থাকে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও থানকুনি পাতা ত্বককে দূর্ষণ ও সূর্যের রশ্নির হাত থেকে রক্ষা করে। যাতে করে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। তাছাড়া থানকুনি পাতা ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ও রক্তে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায় ফলে ত্বকের নমনীয়তা বাড়ে ও বলিরেখা দূর হয়।
- চুল পড়া রোধ করতে থানকুনি পাতা বিশেষভাবে উপকারী। থানকুনিতে থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। যার ফলে চুল পড়া রোধ করে ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয় | থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা
থানকুনি পাতা বিভিন্ন রোগ নিরাময়, রূপচর্চা ছাড়াও থানকুনি পাতা ত্বক ফর্সা করতে ম্যাজিকের মত কাজ করে। তাই আর নয় নিজেকে গুটিয়ে রাখা। আপনি ঘরে বসেই কোন ফর্সা হওয়ার ক্রিম মাখা ছাড়া আপনার ত্বকে করতে পারবেন উজ্জ্বল ও ফর্সা।
আরও পড়ুনঃ গ্রামে কি ব্যবসা করা যায়
তার জন্য আপনাকে নিচের দেওয়া পদ্ধতিটি অবলম্বন করতে হবে। এছাড়াও থানকুনি পাতা আপনার চুল পড়া রোধ করতে, মুখের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের রং ফর্সা করার জন্য প্রতিদিন সকালে তিন থেকে চার চামচ থানকুনি পাতার রসের সাথে এক কাপ পরিমাণ দুধ মিশিয়ে নিয়মিত সেবন করলেই অল্প দিনের মধ্যে আপনি পাবেন আপনার উজ্জ্বল ফর্সা কোমনীয় ত্বক।
থানকুনি পাতার ব্যবহার | থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা
থানকুনি পাতা একটি ঔষধি গাছ। প্রায় সব ধরনের প্রয়োজনেই থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয়। আমরা থানকুনি পাতা । রূপচর্চা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো থানকুনি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। চলুন থানকুনি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
- জ্বর হলে থানকুনি পাতার রস খেতে হয় এতে জ্বর ভালো হয়। এক চা চামচ থানকুনি পাতার রসের সাথে এক চা চামচ শিউলি পাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে জ্বর ভালো হয়।
- গ্যাস্টিকের সমস্যায় থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয়। আধা কেজি দুধের সাথে আধাপোয়া থানকুনি পাতার রস ও এক পোয়া মিশ্রি মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি প্রতিদিন সকালে একবার খেলে গ্যাস্ট্রিককে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- হজমশক্তি বৃদ্ধিতে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয়। এক মাস পর্যন্ত পেপে অথবা বেগুনের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে রান্না করে প্রতিদিন খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- থানকুনি পাতা পেটের পীড়া দূর করতে বিশেষভাবে উপকারী। চার পাঁচটি থানকুনি পাতা শিকড়সহ ভালো করে ধুয়ে তার সাথে আম গাছের ছাল একটি কচি আনারসের পাতা ও কাঁচা হলুদের রস একসাথে বেটে খালি পেটে খেতে হবে। এতে করে পেটের পীড়া দূর হয়। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি সবথেকে বেশি কার্যকরী।
- থানকুনি পাতা পাচড়া রোগ ভালো করে। দুই চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে দুই তিন চামচ থানকুনি পাতার রস একসাথে মিশিয়ে পাচড়ার জায়গায় মাখলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- থানকুনি পাতা পেটে ব্যথার সমস্যা দূর করে। যদি আপনার পেটে ব্যথা হয় তাহলে থানকুনির পাতা বেটে গরম ভাতের সাথে খেলে পেটে ব্যথা দূর হয়।
- লিভারের সমস্যা থেকে দূরে রাখে থানকুনি পাতা। প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ থানকুনির রস ও ৪/৫ ফোটা হলুদের রস সামান্য চিনি অথবা মধুসহ খেলে লিভারের সমস্যা ভালো হয়। এই পদ্ধতিটি একমাস ধরে প্রয়োগ করতে হবে।
- থানকুনি পাতা আমাশয়ের সমস্যায় ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন সকালে ৫/৭ টা থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে আমাশয় ভাল হয়। এটি সাত দিন পর্যন্ত প্রয়োগ করতে হবে অথবা আপনি চাইলে থানকুনি পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দিনে দুইবার খেতে পারেন এতে আমাশয় ভালো হয়।
- আপনার যদি খুসখুসে কাশি হয় তাহলে আপনি থানকুনি পাতা ব্যবহার করতে পারেন। দুই চামচ থানকুনি পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে খেলে খুসখুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। এই পদ্ধতিটি সাতদিন পর্যন্ত প্রয়োগ করতে হবে। তাহলে পুরোপুরি ভাবে খুসখুসে কাশি বন্ধ হয়ে যাবে।
- যে সকল বাচ্চা কথা বলতে পারে না অথবা দেরিতে কথা বলে অথবা অস্পষ্ট ভাবে কথা বলে তাদের জন্য থানকুনি পাতা বিশেষ উপকারী। তাদের জন্য এক চামচ থানকুনি পাতার রস গরম করে সেটি ঠান্ডা হলে তার মধ্যে ২০ থেকে ২৫ ফোটা মধু মিশিয়ে ঠান্ডা দুধের সাথে খাওয়াতে হবে। এতে করে সেই বাচ্চার দেরিতে কথা বলার বা অস্পষ্ট কথা বলার সমস্যাটি খুব দ্রুত সেরে যাবে।
শেষ কথাঃ থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা - থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়
বন্ধুরা, আজ আমরা থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা - থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয় নিয়ে একটি পোস্ট তৈরি করেছি। আমাদের এই পোস্টে থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা - থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়, থানকুনি পাতার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি, আমাদের এই থানকুনি পাতা দিয়ে রূপচর্চা - থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়, থানকুনি পাতার ব্যবহার পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা উপকৃত হবেন। এই ধরনের আরও নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন, ধন্যবাদ।